হাওড়ার (Howrah) বেলিলিয়াস রোডের এক কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ। তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ডাকাতদের সুপারি দিয়েছিল আর্থিক লেনদেনে জড়িত বেশ কয়েকজন দালাল। মূলত কালো টাকাকে সাদা করার চক্রের সঙ্গে যুক্ত দালালরা এই ঘটনায় যুক্ত। এর পেছনে আন্তঃজেলা দালাল চক্র জড়িয়ে আছে বলে পুলিশের অনুমান। এই ঘটনার তদন্তে ব্যাটরা থানার পাশাপাশি হাওড়া সিটি পুলিশ ও গোয়েন্দারাও তদন্ত করছেন। বুধবার রাতে তিনজনকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে বেলিলিয়াস রোডের একটি লোহার ব্যবসায়ীর গুদামে সিনেমার কায়দায় এক কোটি টাকা লুট হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার তদন্তে নেমে ব্যাঁটরা থানার পুলিশ জানতে পারে ডাকাতির সময় বেশ কয়েকজন দালাল ওই অফিসে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বাসিন্দা ননীগোপাল দাস, বালির বাসিন্দা শিবরাম চ্যাটার্জী এবং বরানগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস। ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের পর পুলিশ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে ডাকাতরা এই দালালদের পরিচিত। তাদের এই ডাকাতির সুপারি দেয় এই তিনজন। পরিকল্পনামাফিক টাকা লেনদেনের সময় ডাকাতরা গোডাউনের মালিককে হাত-পা বেঁধে ফেলে। মুখের লিউকোপ্লাস্ট আটকে দেয়। তারপর রিভালবার দেখিয়ে এক কোটি টাকা আলমারি থেকে লুট করে পালায়। ডাকাতরা গাড়ি করে পালাবার সময় ভাড়া করা গাড়ি আটকে যায় ট্রাফিক জ্যামে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তাড়া করলে ডাকাতরা রিভলবার উঁচিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়।
আরও পড়ুন:
ডাকাতরা পালাতে পারলেও স্থানীয় বাসিন্দারা ধরে ফেলে গাড়ি সমেত চালককে। তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় হাওড়া ময়দান থেকে ডাকাতরা অফলাইনে ট্যাক্সিটি বুক করে। এখনো পর্যন্ত ডাকাতিতে ড্রাইভারের কোন ভূমিকা পাওয়া যায়নি।
পুলিশ তদন্তে জানা গেছে দালালদের সঙ্গে ওই লোহা ব্যবসায়ীর প্রায় ছয় মাসের আলাপ। বেশিরভাগ সময় হোটেলে অথবা ফোনে কথা হতো। ব্যবসায়ীর অফিসেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ওই দালালরা মোটা টাকা ব্যবসায়িক ট্রানজেকশনের ক্ষেত্রে জিএসটি যাতে কম দিতে হয় সেই কারণে কিছু টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে এবং বাকিটা নগদ টাকার মাধ্যমে অন্য ব্যবসায়ীর কাছে হাতবদল হতো। টাকা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দালালদের মোটা টাকা কমিশন দেওয়া হতো বলে জানা গেছে। বুধবার টাকা অন্য পার্টিকে পাঠানোর আগে গোডাউন মালিকের কাছে রাখা ছিল। পুলিশ জানিয়েছে পরিকল্পনামাফিক দালালদের উপস্থিতিতে সেই টাকা লুট করে ডাকাতেরা। তবে খোয়া যাওয়া টাকা পরিমাণ কত তা নিয়ে মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এবং আটক করা ওই তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তাদের বৃহস্পতিবার হাওড়া আদালতে তোলা হয়। পাশাপাশি আদালতের কাছে ব্যাঁটরা থানা পুলিশ ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের জন্য আবেদন করে। তবে মূল অভিযুক্ত ও টাকা এখনো অধরা।