আর জি কর কাণ্ডের পটভূমিতে ছবি তৈরির জের । তৃণমূল ছাত্র পরিষদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে রাজন্যা হালদার ও প্রান্তিক চক্রবর্তীকে । শুক্রবার তাঁদের ছবির পোস্টার প্রকাশ্যে আসার পরই বিতর্ক শুরু হয় । এমন এক স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ছবি তৈরিতে সায় নেই তৃণমূলেরও । তাই পোস্টার সামনে আসার পরই TMCP-র তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাঁদের সাসপেন্ড করা হয় । এবার সাসপেনশনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন রাজন্যা হালদার । আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি জানিয়েছেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত । কিন্তু, তাঁদের ছবিতে কোনও পরিবর্তন আনা হচ্ছে না ।
আনন্দবাজারকে রাজন্যা জানান, প্রচ্ছদ দেখে কখনও গোটা উপন্যাস কেমন, তা নির্ধারণ করা উচিত নয় । তাঁর মনে হয় দলীয় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত । তবে, কোন উদ্দেশ্য নিয়ে তাঁরা স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি তৈরি করেছেন, তা সিনেমা মুক্তির পরে সকলেই বুঝতে পারবেন । তাঁর কথায়, 'ছবি তৈরি করে আমি যদি বলতে না পারি, কোন সময়কালের ঘটনা তুলে ধরছি, তা হলে তো কোনও প্রাসঙ্গিকতাই থাকবে না'। অর্থাৎ দলের তরফে সাসপেনশন এলেও, ছবি মুক্তি নিয়ে অনড় রাজন্যা ।
আর জি করের ঘটনার পটভূমিতে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিটি বানিয়েছেন প্রযোজক প্রান্তিক চক্রবর্তী । শুক্রবারই সিনেমার পোস্টার প্রকাশ্যে আসে । পোস্টারে দেখা যায় রাজন্যাকে । পরনে লাল পাড় সাদা শাড়ি। মাথায় বিয়ের মুকুট, কপালে লাল টিপ। শাড়ির উপর চিকিৎসকদের অ্যাপ্রোন পরেছেন যুব নেত্রী । হাতে স্টেথোস্কোপ । দূরে তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে আরও দুই খুদে, অবয়ব খানিক সত্যজিৎ রায়ের ‘অপু-দুর্গা’র মতো । সিনেমার নাম 'আগমনী তিলোত্তমার গল্প'। মহালয়ার দিন নির্দিষ্ট ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুকে মুক্তি পাবে সিনেমা ।
পোস্টার প্রকাশ্যে আসতেই তা ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায় । পোস্টারকে কেন্দ্র করে সমালোচনার ঝড় ওঠে । বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়ে তৃণমূল । রাজন্যা ও প্রান্তিককে তীব্র আক্রমণ করা হয় । জানা গিয়েছে, পোস্টার প্রকাশ্যে আসার পরই দলের ছাত্র সংগঠনকে খোঁজ নিতে বলেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব । সেই খোঁজের পরেই শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রাজন্যা এবং প্রান্তিককে সাসপেন্ড করা হয় । উল্লেখ্য, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্যের সহ-সভাপতি ছিলেন প্রান্তিক চক্রবর্তী। আর রাজন্যা হালদার ছিলেন যাদবপুর-ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সহ-সভানেত্রী ।
রাজন্যা ও প্রান্তিককে সাসপেন্ডের বিষয়ে কুণাল ঘোষ জানান, আরজি কর নিয়ে একটি শর্ট ফিল্ম তৈরির খবর সামনে এসেছে। এরসঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, তৃণমূল কংগ্রেস সবসময় নির্যাতিতার বিচার চেয়ে সরব হয়েছে। তাই এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়কে হাতিয়ার করে কেউ যদি প্রচার পেতে চান, তাঁরা তার বিরোধী ।