অরিন্দম শীল । টলিউডের নামী পরিচালক । যদিও গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে তাঁর প্রথম পরিচয় অভিনেতা হিসেবেই । বাংলা সিনেমা জগতকে দারুণ দারুণ কাজ উপহার দিচ্ছেন । কিন্তু, বর্তমান সময়ে অরিন্দমের জীবনে একের পর এক বিতর্কের ঝড় । 'মিটু'-র দাগ লেগেছে অভিনেতা-পরিচালকের কেরিয়ারে । গত বছরেরই ঘটনা । যৌন হেনস্থার অভিযোগে তাঁর নামে এফআইআর দায়ের করেন এক নায়িকা । অভিনেত্রীর অভিযোগ, ঘনিষ্ট দৃশ্য বোঝাতে গিয়ে পরিচালক তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন । যদিও অরিন্দমের দাবি ছিল,যা ঘটে তা অনিচ্ছাকৃত । কিন্তু, এই ঘটনার পরই অরিন্দমের বিরুদ্ধে টলিপাড়ার বহু অভিনেত্রী একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুলতে শুরু করেন। সম্প্রতি, অরিন্দমের একটি মন্তব্য বিতর্কের ঝড় তুলেছে । তাঁর অভিযোগ, আরজিকর কাণ্ডে হু তারকা টাকার বিনিময়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন । অরিন্দমের এই মন্তব্যের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্বস্তিকা, দেবলীনা, সুদীপ্তারা । এই যে অরিন্দমের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, এত ক্ষোভ,...কতটা সত্যি, কতটা মিথ্যে আমরা জানি না । তবে, অরিন্দম শীল মানুষটাকে কাছ থেকে যে সবথেকে বেশি চেনেন, তিনি কিন্তু পরিচালকের স্ত্রী । ভাবছেন শুক্লা শীলের কথা বলছি ? না তনুরুচি শীলের কথা হচ্ছে । উইকিতে, অরিন্দমের কাছে শুক্লা স্ত্রীয়ের পরিচয় পেলেও, খাতায়-কলমে এখনও অরিন্দমের স্ত্রী কিন্তু তনুরুচি । সম্প্রতি, এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তনুরুচি অরিন্দমের বিরুদ্ধে এমন কিছু বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন, যা শুনলে আপনাদেরও চোখ কপালে উঠবে । জানেন কি, শুক্লার জন্যই আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন অরিন্দম-তনুরুচিু ! চোখের সামনে দেখতে হয়েছিল, নিজের বন্ধুকে নিয়ে কীভাবে দার্জিলিঙে চলে যায় অরিন্দম । হ্যাঁ, শুক্লা কিন্তু তনুরুচির বন্ধু, সহকর্মী ছিলেন । কীভাবে কী হল, অরিন্দমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কতটা সত্যি, অরিন্দম আদপে কেমন মানুষ, তা আমরা জানব তনুরুচির চোখ দিয়ে ।
সালটা ১৯৯২ । ভালবেসেই বিয়ে করেন অরিন্দম-তনুরুচি । অরিন্দমই নাকি প্রথম প্রপোজ করেছিলেন তাঁকে । সংসার জীবন দারুণ কাটছিল । কিন্তু, ১৯৯৯ সাল থেকে সবটাই হঠাৎ বদলাতে শুরু করে । ওই বছরই তনুরুচির বাবা মারা যান । বাবা-র শ্রাদ্ধ-কাজ সেরে ফিরে আসার পর হঠাৎ জানতে পারলেন, তাঁর আড়ালেই প্রেম করছেন অরিন্দম-শুক্লা । একই অফিসে কাজ করতেন শুক্লা ও তনুরুচি । দার্জিলিঙেও ঘুরতে যান তাঁরা । বাবা মারা যাওয়ার শোক, তার মধ্যেই অরিন্দম তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন । এমনই অভিযোগ তুলেছেন তনুরুচি !
আলাদা থাকা শুরু সেই থেকে । তাহলে ডিভোর্সটা কেন হল না ? ওই সংবাদমাধ্যমকে তনুরুচি বলেন, 'ও-ই বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করেছিল, সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। কারণ, আমার ওই জয়েন্ট প্রপার্টিটা নিয়ে মামলা চলছিল, সেটা প্রমাণিত যে ওটার আমি ৫০ শতাংশ মালিক। এরপর ওটা আমায় লিখে দেবে বলেছিল মাঝে। তবে এখনও ওরা ওটা আমাকে দেয়নি। মাঝে অবশ্য করোনা গেছে। আমি খোরপোষ চাইনি, কারণ আমি চাকরি করতাম, ওদের কোনও টাকা নিতে চাইও না। তবে আমার প্রাপ্যটা বুঝে নিতে চাই। '
অরিন্দমের বিরুদ্ধে ওঠা মিটুর অভিযোগ নিয়ে তনুরুচির বক্তব্য, পুরোটা অবিশ্বাস্য হয় না । বিশ্বাসঘাতকতা যে করে, আবারও তার সেই প্রবণতা থাকে । সবটা উপেক্ষা করা যায় না ।
তনুরুচি বিয়ের আগে একটা-দুটো সিনেমায় অভিনয় করেছেন । কিন্তু, বিয়ের পর অভিনয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন । তাই আর গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডে জড়াননি । তবে, চাকরি করতেন । সম্প্রতি, অবসর নিয়েছেন । তবে, একটা ব্যবসাও শুরু করেছেন । বাকি জীবনটা এভাবেই কাটিয়ে দিতে চান । শুধু স্মৃতি হিসেবে রেখে দিতে চান অরিন্দমের সঙ্গে কাটানো ভাল মুহূর্ত গুলো । তবে, শুক্লাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তনু । তাঁর কথাই, শুক্লার জন্য তিনি বেঁচে গিয়েছেন । আর খাতায়-কলমে স্বামীর প্রতি তাঁর বার্তা, ভাল থাকুক অরিন্দম, সব ইচ্ছা পূরণ হোক । আরও যদিও চার-পাঁচটা মেয়েকে প্রপোজ করার ইচ্ছা থাকে, তাও পূরণ হয় । খুব হালকা চালে, ব্যাঙ্গের ভঙ্গিতেই অরিন্দমের বিরুদ্ধে ওঠা সব মিটু অভিযোগে সত্যির সিলমোহরটা বসিয়ে দিলেন ।