১১ মে, ২০১৮। রূপকথার গল্পে এসেছিল সোনালি বাঁক। দেখতে দেখতে এসে গেল ২০২৪-এর ১১ মে। সোনালি সেই বাঁক ধরে ছ' ছ'টা বছর ধরে অনেকটা সফর করে ফেললেন টলিপাড়ার পাওয়ার কাপল রাজ চক্রবর্তী, শুভশ্রী গাঙ্গুলি। বিয়ের বয়স বাড়ে, কিন্তু একটুও বুড়িয়ে যায় না রাজ-শুভশ্রীর রোম্যান্স।
বিয়েই নাকি প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি। সেই পরিণতি তো কবেই পেয়েছিলেন যুগল। তা হলে, গল্পের হ্যাপি এন্ডিং? আহা! তা কী করে হয়! ভালবাসার গল্পে নতুন পাতা জুড়ে জুড়ে ছোট গল্প কখন হয়ে ওঠে উপন্যাস, তারপর মহাকাব্য।
জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করলেন রাজ-শুভশ্রী। একটু একটু করে সংসারী হলেন, প্রেমিক প্রেমিকা থেকে স্বামী-স্ত্রী, তারপর একই পরিবারের অংশ হয়ে ওঠা, বাবা-মা হিসেবে প্রমোশন, তারপর আরও একবার বাবা-মা হওয়ার আনন্দ, জীবনের সব চাওয়া পাওয়া অথবা না পাওয়াগুলোই একসঙ্গে ভাগ করতে থাকলেন রাজ-শুভশ্রী হাতে হাত রেখে।
টলিউডের অভিনেত্রীরা সংসারি হলে নাকি প্রায়োরিটি বদলে যায়, কেরিয়ার চলে যায় ব্যাকফুটে, এসব আসলে মিথ, প্রমাণ করে দিলেন শুভশ্রী। পেশাগত জীবনে আরও বেশি চ্যালেঞ্জ নেওয়া শুরু করলেন সিনেমার ক্ষেত্রে। নিজেকে ভাঙলেন বারবার। প্রায়োরিটি বদলালো না শুভশ্রীর, শুধু প্রায়োরিটির আকাশটা আরও চওড়া হল। সেই আকাশে রাজ না থাকলে পথ চলা এত মসৃণ হত না হয়তো অভিনেত্রীর।
অন্যদিকে, রাজ পরিচালনার পাশাপাশি রাজনীতিতে হয়ে উঠলেন আরও পাকা পোক্ত, প্রযোজনায় হাত দিলেন। ছবির বিষয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রাজ বরাবরই আর ৫ জনের চেয়ে আলাদা, স্রোতে গা না ভাসানো। তবে দিন যত গড়াচ্ছে, আরও যেন পরিণত হচ্ছেন তিনি। এর পেছনে শুভশ্রীর ভূমিকা উল্লেখ না করলে তা হবে ঘোর অন্যায়।
নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জীবনের নানা বাঁকে সঙ্গীর নিশর্ত সমর্থন থাকলে ডানা মেলাটা একটু সহজ হয়ে যায়। ইউভান আর ইইয়লিনির বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে।
ছ' বছরের দাম্পত্য। ছ' বছর খুব বেশি সময় নয়, আবার খুব অল্পও তো নয়। বিবাহিত জীবনে খুচরো ঝুট ঝামেলা লেগেই থাকে সব ঘরে। গ্ল্যামারদুনিয়ার দম্পতি হলে তো কথা-ই নেই। কিন্তু এই ছ'বছরে রাজ-শুভশ্রীর সম্পর্কে এতটুকু আঁচড় লাগেনি। ভালবাসার গ্রাফ কখনও নিম্নমুখীও হয়নি। এর পেছনে কোন ম্যাজিক?
আচ্ছা, ছ' বছর, ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টা গোলাপে বিছনো ছিল রাজ-শুভশ্রীর জীবন? রুপোলি পর্দায় দেখা রূপকথার রাজা-রানির মতো সর্বাঙ্গ সুন্দর, মসৃণ সম্পর্ক বাস্তবে হয়? সত্যি প্রেমের গল্পগুলো আসলে চড়াই-উতরাইয়ে ভরা হয়। যারা ভালবাসতে জানেন, তারা নিজেদের ঝগড়াগুলোও আড়াল করতে জানেন। ঠিক যেমন রাজ-শুভশ্রী। লড়াই যদি হয়েও যায়, নিজেদের মধ্যে রাখতে জানেন। বাকি পৃথিবীর কাছে ওরা কিন্তু একটাই টিম।