শহর জুড়ে উৎসবের মরশুম। আর উৎসব মানেই একগুচ্ছ ছবির রিলিজ। আলোয় সেজে উঠছে শহরের রাস্তাঘাট, পার্কস্ট্রিটে ভিড় বাড়ছে ধীরে ধীরে, সঙ্গে মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিনের হলের বাইরে ইতিমধ্যেই পোস্টারে পোস্টারে ছয়লাপ। বড়দিনের ছবিগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি চর্চায় রয়েছে- দেবের খাদান, এবং রাজের পরিচালনায় শুভশ্রী এবং ঋত্বিকের সন্তান। অন্যদিকে গত ৫ ডিসেম্বর থেকে দেশ তথা বিশ্বের সমস্ত স্ক্রিনে কার্যত রাজ করছে দক্ষিণী সুপারস্টার আল্লু অর্জুনের সিনেমা ‘পুষ্পা ২’ । আবার মুক্তির আগে থেকেই দেবের খাদান ঘিরেও কিন্তু উত্তেজনা তুঙ্গে। অনেকদিন পর কমার্শিয়াল মশলা ছবিতে দেব। ট্রেলার দেখে KGF, Salar এর সঙ্গেও কেউ কেউ তুলনা করছে দেবের খাদানকে।
তবু বাংলার বুকে, বাংলার সুপারস্টারের ছবি খাদানের হল পেতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে দেবদের। দেব জানান, অন্য ভাষার একটি সিনেমার জন্য শো পাচ্ছিল না দেবের খাদান। শুরু করা যাচ্ছিল না অগ্রিম বুকিংও। হবে নাই বা কেন? কোন ছবির পাল্লা ভারি জানতে আমরা এডিটরজি বাংলার তরফে পৌঁছে গিয়েছিলাম ভবানীপুরের বিজলি সিনেমা হলে। এখনও মানুষের মুখে মুখে ঘুরছে পুষ্পা-২ এর ডায়লগ। ‘ঝুকে গা নেহি’,byte কেউ সিনেমা দেখে ফেলেছেন বার পাঁচেক কারও বা সেকেন্ড টাইম।
‘বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ান’ এমন স্লোগান বাংলা জুড়ে উঠলেও, দক্ষিণী ছবির ধারেকাছে পৌঁছতে পারছে না বাংলা ছবি। এমনকি বলিউডের নানা ছবিকেও কোনঠাসা করে দিচ্ছে দক্ষিণী ছবি। RRR, KGF, পুষ্পা থেকে বাহুবলি। ভারতীয় সিনেমার সিনেমার পালে হাওয়া লাগিয়েছে সাউথ ইন্ডাস্ট্রি।
বক্সঅফিসে কেন দক্ষিণী ছবির সঙ্গে দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছে অন্যান্য ছবি? তার বেশ কয়েকটি কারণ উঠে এসেছে দর্শকদের মুখেই। কেউ বলছেন বলিউড এবং টলিউড প্রায়শই নির্ভরশীল থাকে তারকা অভিনেতাদের উপর। দক্ষিণী সিনেমা তারকা-কেন্দ্রিক হলেও সেখানে গল্পকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, আল্লু অর্জুন বা যশ-এর মতো তারকারা থাকলেও "পুষ্পা" এবং "কেজিএফ"-এর গল্পই আসল নায়ক।
কেউ বা বলছেন, দক্ষিণী ছবি তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, এবং সমাজের গল্পকে সৃজনশীলভাবে তুলে ধরতে সফল। সেখানে বলিউড বা টলিউডের ‘কপি’ করার প্রবণতা রয়েছে এমন অভিযোগও উঠছে। এছাড়াও বড় মাপের ভিএফএক্স এবং অ্যাকশন সিকোয়েন্স তো অবশ্যই একটি কারণ হিসেবে উঠে আসছে।
তবে এমন মানুষদেরও আমরা পেয়েছি, যারা এখনও অবধি ভরসা রাখছেন বাংলা ছবির উপরেই। দেবের ছবি মুক্তি পেলে তা হলে গিয়ে দেখবেন, এই বাংলায় এমন মানুষের অভাবও নেই। এই মরশুমে, বাংলার বুকে পুষ্পার দাপটকে পিছনে ফেলে কতটা ব্যবসা করতে পারে দেবের ছবি, তা সময়ই বলবে।