একটা সময় যখন কলকাতার রাত মাতিয়ে রাখতেন তিন যুবক। উত্তর থেকে দক্ষিণ। শ্যামবাজার থেকে গড়িয়াহাট, রাত যত বাড়ত, তাঁদের উল্লাস ততই ধারাপাতের মতো বেড়ে যেত। তাঁরা ছিলেন সুনীল-সন্দীপন এবং শক্তি। তিন জনেই আজ অতীত। নিন্দুকেরা বলেন, সেই বাঙালিও তো আর নেই। যাঁরা নিজের জন্য উচ্ছ্বাস দেখাতে পারে। যাঁরা একটু আনন্দকে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারে। বিধান সরণির ট্রাম লাইনে সোজাসুজি মুখ করে যাঁরা বলতে পারে, দেখ এটাই রাতের কলকাতা।
কিন্তু একজন বাঙালি তো আছেন ! হ্যাঁ, আছেন। আর তিনি আছেন বলেই বৃহস্পতিবারের সাহেবদের লন্ডনে খেলে গেল এক ঝলক কলকাতার দক্ষিণা হাওয়া। রাতের বিগবেনকে দেখে মনে হচ্ছিল, এই তো সবার সঙ্গে যেন আউট ট্রাম ঘাটের সামনে দাঁড়িয়ে মহারাজ।
মিউজিক সিস্টেমে বলিউডের গান চলছে। আর আনন্দ, উল্লাসে নেচে চলেছেন কিছু বাঙালি। যাঁদের মধ্যমণি কলকাতার মহারাজ, বাংলার মহারাজ, ভারতের মহারাজ আবার তিনি দুনিয়ার কাছেও মহারাজ। একেই বলেই নেচে-গেয়ে জন্মদিন পালন।
আরও পড়ুন : বিলেতে মহারাজের হাফ সেঞ্চুরির সেলিব্রেশন, নাচলেন 'লন্ডন ঠুমাগদা'র তালে
৫০ বছর। জীবনের অর্ধেকটা পথ পেরিয়ে আসার সংখ্য়া। বাইশ গজে কখনও এই ৫০ তাঁর কাছে সহজ ছিল, আবার কখনও কঠিন। জীবনের বাইশ গজেও ৫০ পূর্ণ করতে একটু বেগ তাঁকে পেতে হয়েছিল। কিন্তু সেটা এখন তিনি সামলে নিয়েছেন। মাথায় টুপি, গায়ে জ্যাকেট জড়িয়ে বলিউডের যে কোনও নাম্বারের সঙ্গে তিনি এখনও সমান সাবলীল।
কোনও ডোনার সঙ্গে। আবার কখনও সানা হলেন তাঁর সঙ্গী। মধ্য়রাত পর্যন্ত চলল মহারাজকীয় ৫০-এর সেলিব্রেশন। হয়ত উপর থেকে তা উপভোগ করলেন সেই তিন মূর্তি। তাঁরা সুনীল-সন্দীপন এবং শক্তি। দু হাত ছুঁড়ে হয়তো বললেন, দেখ বাঙালি আজও বেঁচে আছে। বেঁচে আছে বাংলার সৌরভের মধ্যে।