স্রোতের প্রতিকূলে প্রবাহমান সমুদ্র। সাদাত হাসান মান্টো ও তাঁর সাহিত্যের কথা বলতে গেলেই প্রথমে এই কথাই মনে পড়ে। জীবনের প্রতিটি আলোকোজ্জ্বল বাঁকেও যে কতটা আঁধার থাকে, তা নির্দ্বিধায় ও নির্ভয়ে বারবার নিজের লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন যিনি, বৃহস্পতিবার তাঁর ১১১-তম জন্মদিবস। তাঁর জন্ম হয়েছিল পাঞ্জাবের লুধিয়ানার সামরালা নামের শহরে। সাম্প্রদায়িকতা, দাঙ্গা, বিভীষিকা, তাঁর সাহিত্যের নিষিদ্ধ হওয়া, কোনটিই বাদ যায়নি। তাঁর ওপর আঘাতের পর আঘাত এসেছে। তাঁকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন তৎকালীন শাসকেরা। কিন্তু, 'ঠান্ডা গোস্ত, খোল দো, তোবা টেক সিং, কালি সালোয়ার-এর মতো গল্পের লেখকে কি আর ওইভাবে মোছা যায়! তিনি তো সময় পেরিয়ে গিয়ে হয়ে উঠেছেন চিরকালীন!
১৯৪৭ সালের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনকালে তাঁর বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল মোট তিনবার।
দেশভাগের ঘেরাটোপে পড়ে মান্টো হয়ে গিয়েছিলেন 'পাকিস্তানের লেখক'। একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই দেশ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। তিনি নিজের লেখা সম্বন্ধে বলেছিলেন- 'আমি থাকব না। কিন্তু, আমার কথাগুলো থেকে যাবে। আমার গল্পই আমার কথা বারবার বলবে'। তাঁর সম্বন্ধে আরেক বারতীয় কিংবদন্তি লেখক সলমন রুশদি বলেছিলেন- 'আধুনিক ছোটগল্পের অবিসংবাদিত সম্রাট'.। তাঁর মৃত্যুও হয় লাহোরে। যদিও, লেখক হিসাবে তাঁর যে মৃত্যু নেই কোনও সে কথা এতদিনে প্রমাণিত। আপামর সাহিত্যপ্রেমীদের মনে দোল খেতে থাকে, তাঁর সেই অমোঘ প্রশ্ন- 'কে বেশি ভালো গল্প লিখতে পারে? খোদা না মান্টো'?