আমেরিকা থেকে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরাবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নথিতে একাধিক ভারতীয়দের নামও আছে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই দেশে ১৮ হাজার অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার তাদের দেশে ফেরাতে চায় ওয়াশিংটন। অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি নয়াদিল্লি। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তে সমর্থন আছে কেন্দ্রেরও।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের সংখ্যা আরও বাড়াতে পারে। এখনও ১৮ হাজার জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী 'পিউ রিসার্চ সেন্টার' আমেরিকার ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রেশন নিয়ে একটি চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ্য়ে এনেছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমেরিকায় অবৈধভাবে থাকার ক্ষেত্রে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারতীয়রা। মেক্সিকো ও সালভাদরের পরই আছেন ভারত। সমীক্ষায় দাবি, প্রায় ৭ লক্ষ ২৫ হাজার ভারতীয় আমেরিকায় ভারতীয় বিনা নথিতে বাস করছেন।
আমেরিকার প্রেসিডেন্টের পদে বসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু নির্দেশিকা স্বাক্ষর করেছেন। অবৈধ বসবাসকারীই নয়, এবার আমেরিকায় জন্ম হলেই কেউ নাগরিকত্ব পাবেন না। এমনই আইনে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কী বলা হয়েছে নতুন নিয়মে। অবৈধ কোনও অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান প্রসব করলে সেই শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে না। ট্রাম্পের Paএই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বোস্টনের ফেডারেল আদালতে জোটবদ্ধভাবে মামলা করেছে ২২টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলোম্বিয়া ও সান ফ্রান্সিসকো শহর কর্তৃপক্ষ। কী বলা হয়েছে ওই নির্দেশে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন বলছে, যে সব নাগরিক অবৈধভাবে আমেরিকায় বাস করছেন তারা এই আওতায় পড়বেন। যারা টুরিস্ট ভিসায় আছেন, তাদের শিশুরা আমেরিকায় জন্ম নিলেও আমেরিকার নাগরিকত্ব পাবেন না। বাবা ও মায়ের গ্রিন কার্ড না থাকলে ওই শিশুকে যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট বা ভিসা দেওয়া হবে না। আমেরিকার আইনে জন্মসূত্রে যারা নাগরিকত্ব পান, তাদের বলা হয় জুস সোলি। এই লাতিন শব্দের অর্থ 'মাটির অধিকার'। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা হয়েছিল, প্রত্যেক শিশুকে স্বাভাবিক ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ১৮৬৮ সালে ১৪তম সংশোধনীতে এই বিষয়টি আমেরিকার আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের দাবি ছিল, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে দেশে অভিবাসীদের সমস্যা বাড়ছে। অবৈধ অভিভাসীদের সন্তানরাও ওই দেশে জন্ম নিলে যাতে নাগরিকত্ব না পাওয়া যায়, তা এবার নিশ্চিত করতে চায় ট্রাম্প সরকার।
তবে H1B ভিসা বিতর্ক মাথায় নিয়েই শপথ নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হয়েই তিনি চাইছেন, কর্মদক্ষ মানুষরা যাতে আমেরিকায় যান। এই আবহে আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্টের মন্তব্য ফের বিতর্ক বাড়াল বলে মনে করা হচ্ছে। ওপেন AI সংস্থার কর্তা স্যাম অল্টম্যান, সফটব্যাঙ্কের কর্তা মাসায়োশি সন, ওরাকল কর্তা ল্যারি এলিসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প। তাঁদের নিয়ে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। ওখানেই প্রেসিডেন্ট জানান, আমেরিকায় আসা দক্ষ ব্যক্তিদেরই তাঁর পছন্দ। যাদের যোগ্য়তা নেই, এমন ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও সাহায্য় করার জন্য়ও কেউ আসে, তাদেরও পছন্দ করেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। কর্মসূত্রে আমেরিকায় যেতে গেলে H1B ভিসার প্রয়োজন হয়। আমেরিকায় এই ভিসা যাদের আছে, তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশই ভারতীয়। এই ভিসার অধীনে ৬ বছরের জন্য কেউ আমেরিকায় থাকতে পারেন। প্রথমে এই ভিসা ৩ বছরের দেওয়া হয়। পরে আরও ৩ বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালে ট্রাম্পের আমলে H1B ভিসা সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবারও ভোটের আগে এই নিয়ে সুর চড়ান ট্রাম্প। বিদেশ থেকে কর্মী আনার বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি। শপথগ্রহণের আগেই আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ভিসার নিয়মে বেশ কিছু বদল আনে। গত শুক্রবার থেকে H1B ভিসার নতুন নিয়ম কার্যকর করা হয়। যদিও আমেরিকার এই বিভাগ জানিয়েছে, আধুনিকীকরণের জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।