তুলসী গ্যাবার্ড। আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব পেলেন ৪৩ বছরের এই মহিলা। ওয়াশিংটনে পৌঁছেই এই তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গেই প্রথম দেখা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় তাঁদের। তুলসী আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের দায়িত্ব পেতেই ঘুম উড়েছে রাশিয়া, চিনের গোয়েন্দাদের। কিন্তু কে এই তুলসী গ্যাবার্ড। তাঁর সঙ্গে কেন দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নাম শুনলে অনেকেই ভুল করতে পারেন, তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। কিন্তু তুলসী আগেই জানিয়েছেন, তাঁর পরিবারের সঙ্গে ভারতের কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর শৈশব হাওয়াই ও ফিলিপিনসে কেটেছে। তবে এমন নাম কেন তাঁর! তাঁর মা ক্যারল পোর্টার গ্যাবার্ড হিন্দুধর্মে বিশ্বাস করতেন। তাই তাঁর সব ছেলেমেয়ের নামের সঙ্গেই ভারতীয় যোগ। তুলসীর আরও চার ভাই বোন আছে। তাঁদের নাম ভক্তি, জয়, আরিয়ান ও বৃন্দাবন। তুলসী নিজেও কিন্তু হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী। কয়েকবছর আগে তুলসীর একটি হরেকৃষ্ণ গাওয়া ভিডিয়ো একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে আমেরিকার গোয়েন্দা বিভাগে প্রথম হিন্দু মহিলা হিসেবে নিযুক্ত হলেন। এবার মার্কিন সফরে গিয়ে তাঁর সঙ্গেই দেখা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তুলসী একসময় মার্কিন সেনেটে ডেমোক্রেটিক সদস্য় ছিলেন। বিভিন্ন দেশের কনস্পিরেসি থিয়োরিকে প্রচার করানোর অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব পেলেন তুলসী গ্যাবার্ড। ওভাল অফিসে নতুন গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর কী বললেন তিনি! ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর জানান, মার্কিন ইনটেলিজেন্স এজেন্সিকে এতদিন পলিটিকাল টুলস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সেই বক্তব্যকে সমর্থন করে তুলসী জানিয়েছেন, ইনটেলিজেন্স কমিউনিটিকে ফের নতুন করে গুরুত্ব দিতে হবে। তুলসী জানান, "দুর্ভাগ্যবশত, ইনটেলিজেন্স কমিউনিটিকে আমেরিকার মানুষ খুব একটা বিশ্বাস করে না। কারণ মানুষ দেখেছে, গোয়েন্দা সংস্থাকে অস্ত্র ব্যবসা ও রাজনীতিকরণের জন্য় ব্যবহার করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আঘাত হানছে রাজনীতি।" তাঁর শপথগ্রহণের পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তুলসী গ্যাবার্ডকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তুলসী আমেরিকার জন্য় নতুন উদ্দম আনবে। জাতীয়তাবাদেও নতুন দিন আসবে।
বুধবার ওয়াশিংটনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন নরেন্দ্র মোদী। নয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কারও অজানা নয়। হোয়াইট হাউজে যাওয়ার আগে ব্লেয়ার হাউজে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার ঠিকানা ১৬৫১, পেনসিলভেনিয়া স্ট্রিট। ৭০ হাজার স্কয়্যার ফুটের এই বাংলো হোয়াইট হাউজের অন্যতম বৃহত্তম অতিথিশালা। তবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। ট্রাম্পের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে চমকে গিয়েছে বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতারা। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শক্তি, প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, অভিবাসন, একাধিক সেক্টর নিয়ে আলোচনা হবে মোদী ও ট্রাম্পের। ১০৪ ভারতীয়কে অবৈধ অভিবাসনের জন্য হাত-পায়ে শিকল বেঁধে দেশে পাঠানো হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে। সব বিষয় নিয়েই কথা হবে ভারত ও আমেরিকার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, প্রাকৃতিক শক্তি, বাণিজ্যে শুল্কনীতি, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে।
এবার মার্কিন সফরে টেকজায়ান্ট এলন মাস্কের সঙ্গে দেখা করতে পারেন নরেন্দ্র মোদী। এলন মাস্ককে সঙ্গে একাধিক চুক্তির প্রস্তাব দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতে স্টারলিঙ্ক কবে আসবে! স্টারলিঙ্কের লাইসেন্স এখনও পেন্ডিং হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হলে সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসতে পারে।