প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ফ্রান্স ও আমেরিকা সফর। সোমবারই প্যারিসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে আছেন ভারতের উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসার ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা, সাস্টেনেবল এনার্জি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা দুই দেশের। ফ্রান্স সফর শেষে আমেরিকাতেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিবাসীদের নিয়ে কথা হতে পারে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের। নয়া মার্কিন শুল্কনীতি ও বাংলাদেশ নিয়েও আলোচনা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারত-ফ্রান্সের মধ্যে রাফাল যুদ্ধবিমানের চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ফ্রান্সের নৌ-বাহিনী নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এছাড়া ফ্রান্সের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়েও আলোচনা হতে পারে। যা ভারতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য় বড় সিদ্ধান্ত হতে পারে।
ফ্রান্স সফর সেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওয়াশিংটন যাবেন। বৃহস্পতিবার আমেরিকা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা মোদীর। এই বৈঠকে ভারত-আমেরিকা স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ নিয়ে কথা হতে পারে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর একাধিক নতুন নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত অন্যতম। একাধিক ভারতীয়কে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে গিয়েও সমস্যায় পড়েছেন অনেকে। সম্প্রতি ১০৪ জন ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীকে দেশে পাঠিয়েছে আমেরিকা। বেশ কিছু অবৈধ হাত-পা বেঁধে বিমানো তোলা মোদী-ট্রাম্পের বৈঠকে সেই সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত চাইছে, আমেরিকা H1B ভিসা নীতিতে শিথিলতা আনুক। ভারতীয় পেশাদাররা যাতে আমেরিকায় কাজের সুযোগ পায়, বৈঠকে এমনই প্রস্তাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আমেরিকার নয়া শুল্কনীতিতেও চাপে পড়বে ভারত। নতুন শুল্কনীতি অনুযায়ী, ভারত, চিন, জাপানের পণ্যের উপর বাড়তি কর আরোপ করছে আমেরিকা। এখনও ভারতীয় পণ্যের উপ সরাসরি অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়নি। কিন্তু এই নিয়ে মোদী-ট্রাম্প দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। তবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সম্পর্কের বরফ গলবে।
কোয়াড জোট ও ইন্দো-প্যাসিফিক নীতি প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য বিস্তার করছে। তাই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে আমেরিকাকে পাশে চাইছে ভারত। হিন্দ মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা নিয়েও আলোচনা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়েও কড়া নজর রাখছে ভারত ও আমেরিকা। চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে। এই বৈঠকে ভারতের দুই পড়শি দেশকে নিয়েও কথা বলতে পারেন নরেন্দ্র মোদী। তাই এবার সফরে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা। এই সফর শেষ হলে মোদি সরকারের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ থাকবে। কীভাবে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রেখে ভারতের কৌশলগত স্বার্থ নিশ্চিত করা যায়।