প্রাক-মোবাইল যুগে একই ধারার প্রযুক্তির অন্যতম আকর্ষণ পেজার বহু দশক বাদে ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে! এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের চালিকাশক্তি হিসেবে উঠে আসছে ওই পেজারেরই নাম! মঙ্গলবার একের পর এক পেজার বিস্ফোরণে কার্যত বিপর্যস্ত লেবানন। একই সঙ্গে সিরিয়াতেও পেজার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত এগারো জনের। আহতের সংখ্যা পেরিয়েছে চার হাজার!
বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছেন ইরানের রাষ্ট্রদূতও। লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দাবি, দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ এই বিস্ফোরণ ঘটে। অজস্র মানুষের হাতে ও পকেটে থাকা পেজার প্রায় একই সময়ে পর পর ফাটতে থাকে। এক ঘণ্টা ধরে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পেজার বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। স্বাভাবিকভাবেই ইজরায়েলের দিকে আঙুল তুলেছে হিজবোল্লা গোষ্ঠী। এই কাজের জন্য তাদের পাল্টা হুঁশিয়ারিও দিয়েছে তারা। তবে এখনও পর্যন্ত ঘটনার দায় স্বীকার করেনি ইজরায়েল।
সূত্রের খবর, প্রায় ৫ মাস আগে লেবাননের হেজবোল্লা গোষ্ঠী ৫ হাজার তাইওয়ান পেজারের অর্ডার দিয়েছিল। জানা যাচ্ছে, হেজবোল্লা জঙ্গিদের ব্যবহারের জন্য অর্ডার দেওয়া সেই পেজারে বিস্ফোরক ঢুকিয়েছিল ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ, গত মঙ্গলবার পরিকল্পিতভাবে সবকটি পেজারে একত্রে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
উল্লেখ্য, পেজারে লোকেশন ট্র্যাক করা যায় না।হিজবোল্লা গোষ্ঠী এই পেজার ব্যবহার করে যাতে তাদের লোকেশন ট্র্যাক না করা যায়। মূলত রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে মেসেজ পাঠায় ও গ্রহণ করে এই পেজার। ডিভাইসটির ছোট স্ক্রিনে সেই বার্তা দেখা যায়। ২০০০ সালের দোরগোড়া পর্যন্ত বহু মানুষ পেজার ব্যবহার করত। মোবাইল ফোনের আবিষ্কারের পর থেকেই পেজারের ব্যবহার কমতে থাকে।
২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে এই পেজার ব্যবহার এবং তাতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিশ্বে। গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইজরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধ নিয়ে হইচই চলছেই। তার মধ্যে ইজরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে গেছে হিজবোল্লা গোষ্ঠীও। তাই মনে করা হচ্ছে এই হামলা চালিয়েছে ইজরায়েলই। তবে কীভাবে পরপর এমন বিস্ফোরণ ঘটানো হল, তা এখনও পর্যন্ত বোঝা যায়নি।