মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যেই শেষ উড়ান-সফর! অর্থাৎ, বিমানে বসতে না বসতেই নেমে আসতে হবে নিজের আসন থেকে! বিমানটি চলতে শুরু করার পর সিটবেল্ট আটকানোরও সময় পাওয়া যায় না। শুধু তাই নয়, ভ্রমণের পালা সাঙ্গ বিমানে চড়ে বসতে না বসতেই! এছাড়া, আরও একটি ব্যাপার আছে! প্রতিটি যাত্রার মতোই, বিমানযাত্রা শুরু আগেও মনের মধ্যে চলতে থাকে মিশ্র অনুভূতি।
সামনে কী আছে, যাত্রার ফল কী হবে ও যাত্রার অভিজ্ঞতা কেমন হবে, এই সব নিয়ে অবচেতনেই আশা ও আশঙ্কার দোলাচল থাকেই। ম্যাগি তৈরি করতে যত সময় লাগে, তার থেকেও কম সময়ে বিমান অবতরণ করে যাওয়ায়, এমনকি ওই বোধগুলিও মনের মধ্যে ঠিকভাবে বাসাই বাঁধতে পারে না!
এটিই আসলে দুনিয়ার সংক্ষিপ্ততম বিমানযাত্রা! যে বাণিজ্যিক উড়ানটির যাত্রাপথের দূরত্ব ১.৭ মাইল। স্কটল্যান্ডের দুটি দ্বীপের মধ্যে বিমান চলাচল করে এই পথে। এই বিমানে কমপক্ষে ৮ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারেন একসঙ্গে। যদি আবহাওয়া ভাল থাকে, তাহলে পুরো যাত্রাপথ সম্পূর্ণ করতে আসলে সময় লাগে এক মিনিটেরও কম! সময় লাগে মাত্র ৫৭ সেকেন্ড!
যদি, আবহাওয়া ভাল নাও থাকে, তাহলেও এই সময়টা পেরোতে সব মিলিয়ে দেড় মিনিট মতো সময় লাগেই না! স্কটল্যান্ডের উত্তর দিকে ওর্কনের কাছে ওয়েস্ট্রে আর পাপা ওয়েস্ট্রে দ্বীপের মধ্যে ১৯৬৭ সাল থেকে লগানেয়ার গোষ্ঠীর বিমান চলাচল করে। ইতিমধ্যেই গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে এই সংক্ষিপ্ততম বিমানপথে যাত্রার কারণে নিজেদের নাম লিখিয়েছে লগানেয়ার গৌষ্ঠী।
৫৭ বছর ধরে চলা এই বিমানের যাত্রীদের বিচিত্র অভিজ্ঞতা। ডেলি প্যাসেঞ্জাররাই মূলত যাতায়াত করেন এই বিমানে। ডাক্তার, ব্যাঙ্কার, পুলিশ অফিসার এমনকি স্থানীয় অধিবাসীরাও দুটি দ্বীপের মধ্যে যাতায়াতের জন্য এই বিমানই ব্যবহার করেন। তবে, স্বাভাবিকভাবেই, অতি কম সময়ের জন্য জ্বালানির খরচও খুব কম। যার প্রভাব পড়েছে বিমানের টিকিটেও। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য মাত্র হাজার তিনেক টাকা! এডিনবরা বিমানবন্দরের রানওয়ের সমান এই যাত্রাপথ।
আসলে স্কটল্যান্ডের ওর্কনে থেকে ইডে, নর্থ রোনাল্ডসে, সানডে, স্ট্রনসে-সহ অন্য দ্বীপে যাতায়াতের একমাত্র উপায় এই বিমানটিই। একমাত্র লাইফলাইন। এই বিমান চালাতে জ্বালানি লাগে মাত্র ১.৫ টন। খরচ মাত্র ১৫ পাউন্ড।