৯০ বছর আগে মারা গিয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী, পদার্থ বিজ্ঞান এবং রসায়নে দুবারের নোবেলজয়ী মেরি কুরি৷ মেরি কুরির ল্যাবোরেটরির নোটবুকটা রয়ে গিয়েছে এখনও। সে খাতা আজও রেডিও অ্যাকটিভ! শুধু কী আজ? আগামী ১৫০০ বছর তেজস্ক্রিয়তা ছড়াবে সেই খাতা।
নিজের ল্যাবরেটরিতে বছরের পর বছর ধরে রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকায় ১৯৩৪ সালের ৪ জুলাই অ্যাপলাস্টিক অ্যানিমিয়াতে মৃত্যু হয় তাঁর। যে খাতায় মেরি মাত্র তিন বছর, ১৮৯৯ থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত গবেষণার কাজ লিখে রাখতেন, তা এতটাই রেডিও অ্যাকটিভ হয়ে ওঠে, যা আরও ১৫ শতাব্দী ধরে তেজস্ক্রিয়তা ছড়াবে।
মেরি কুরি বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক আশ্চর্য চরিত্র। তিনি পৃথিবীর প্রথম মহিলা, যিনি পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে নোবেল পেয়েছেন। দু'টি আলাদা বিভাগে নোবেল পাওয়ার নজির আজ পর্যন্ত আর কারোরই নেই।
১৮৬৭ সালের নভেম্বর মাসে পোল্যান্ডে মেরি কুরির জন্ম। পোল্যান্ড তখন প্রুশিয়া, রাশিয়া ও অস্ট্রিয়া-শাসিত। ৯ বছর বয়সে বোন সোফিয়াকে হারান মেরি, ১১ বছর বয়সে মাতৃহারা হন। মা ও বোনের চিরবিদায়ের শোকের ক্ষত তাঁকে তাড়া করেছে বহুদিন। সেই সময়ের ইউরোপে নারী স্বাধীনতা খুব সুলভ ছিল না। ১৮৯১ সালে তাঁর বোন ব্রনিয়া যখন প্যারিসে চিকিৎসক হিসাবে পাড়ি দেন, মেরিও তাঁর সঙ্গে যান। ইউনিভার্সিটি অব প্যারিসে ভর্তি হন।
গবেষণাগারে তিনি পরিচিত হন ইলেকট্রোমিটার আবিষ্কারক পিয়ের কুরির সঙ্গে। তাঁদের বিয়ে হয়। ১৯০৩ সালে পিয়ের কুরি ও হেনরি বেকেরেলের সঙ্গে যৌথভাবে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পান মেরি। ১৯১১ সালে মেরি কুরি রসায়নে আবারও নোবেল জয় করেন। নিজের ভালোবাসার কাজের জন্য নিজের জীবনকে তিলে তিলে উৎসর্গ করেছেন মেরি কুরি৷ মেরি, বিজ্ঞানকে কতোটা ভালবাসতেন? যতোটা বাসলে বিজ্ঞানের জন্য নিজের মৃত্যুকে ডেকে আনা যায়।