মহাদেশ তাঁদের আফ্রিকা। তাঁরা ফুটবল খেলে আরব লিগের মধ্য়ে। ২৬ জন ফুটবলারের অধিকাংশ থাকেন বিদেশে। একটা ড্রেসিং রুমে চলে ফরাসি, স্প্যানিস এবং আরবি ভাষা। কিন্তু তাঁরা যখন মাঠে নামেন, তাঁরা সবাই সিংহ। এই বিশ্বকাপে তাঁদের নতুন নাম হয়েছে। মারাকান এক্সপ্রেস। যে গতিতে বেললাইন হয়েছে বেলজিয়াম, স্পেন। শনিবার কাতারের আল-থুমামা স্টেডিয়াম তাদের চাকায় এবার কাটা পড়ল পর্তুগালও। বিয়াল্লিশ মিনিটে একটা গোলই গোটা ম্য়াচের ফারাক গড়ে দিল। ইয়াসিন বুনো, জিয়াস, সেসাই এই নামগুলো উঠে এল ধ্রুবতারার মতো হয়ে। আর কাতারের ক্যানভাসে এই তারাদের নিয়ে যিনি আসল ছবি আঁকলেন তিনি ওয়াহিদ রেগাগুই। ৪৭ বছরের মরক্কো দলের বড়দাই এখন বিশ্বের তামাম কোচেদের থেকে ফ্ল্যাশ ব্লাবের আলো কেড়ে নিয়েছেন। এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত মরক্কো। ইয়াসিন বুনো একটাই গোল খেয়েছেন। সেটাও আত্মঘাতী। এই পরিসংখ্য়ান নিয়ে আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে নামবে মরক্কো। কাতার এবার সত্যিই চমক দিচ্ছে।
১৯৮৬ সালে মেক্সিকো বিশ্বকাপে শেষবার তারা নক-আউটে উঠেছিল। ৩৬ বছর পর কাতারে সেই রেকর্ডকেও ছাপিয়ে গেল মরক্কো। এই বিশ্বকাপে শুরু থেকেই রাবারের সুর মরক্কোর ফুটবলে। উত্তর আফ্রিকার সবুজ-মেরুন বেশ কষ্ঠ করেই কাতারের ছাড়পত্র পেয়েছিল। চার বছর আগে রাশিয়া থেকে তাঁরা ফিরেছিল খালি হাতে। কিন্তু কাতারে মরক্কো বলছে, উলটে দেখুন, পাল্টে গিয়েছি। যার পিছনে একটাই নাম রেগাগুই।
ম্য়াচ শেষ। পর্তুগাল কাঁদছে। চোখ ভর্তি জল নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এককোণে দাঁড়িয়ে সেই দৃশ্য় দেখছিলেন মরক্কোর কোচ। চার বছর আগে তিনি ছিলেন না। কিন্তু তাঁর দেশ হেরেছিল ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর গোলে। আজ তাঁর সবকিছু ফিরিয়ে দেওয়া দিন। সেটা ফিরিয়ে দিল মরক্কো।