আইপিএল,টি-২০ বিশ্বকাপের পরেই রোড টু ইউরো। জার্মান ডেরায় এবারের ইউরো কাপ। অলিভার কানের ডেরায় ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের অপেক্ষায় তাল ঠুকছে ফুটবলপ্রেমীরা। এবার জার্মানিতে বসছে UEFA ইউরো কাপের আসর। এই ইউরো কাপের সঙ্গে জড়িয়ে অনেক ইতিহাস। কত স্বপ্নের শুরু। কত স্বপ্নভঙ্গ। ইউরো কাপ থেকেই মিশেল প্লাতিনি, ভ্যান বাস্তেন, জিদান, ক্লোজের মতো তারকা। সোনালি মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন গার্ড মুলার, অঁরি, বার্গক্যাম্পরা। ২০২৪ সালে সেই ইউরো কাপের আসরে এবার তৈরি হবে নতুন ইতিহাস। ইতিহাস তো তৈরি হবে। তার আগে ফিরে দেখা যাক, ২০০৪-২০২০ সাল। গত পাঁচ বছরের ইউরো কাপের চ্যাম্পিয়নদের ইতিহাস।
২০০৪ সালে ইউরো কাপ ফুটবল ইতিহাসে রূপকথার আখ্যান। ফুটবল ইতিহাসে নাটকীয় অধ্যায়ও বলা যায়। সেই বছর অভিষেক করেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিল পর্তুগাল। কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডকে পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে পর্তুগাল। এদিকে ফ্রান্সকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে গ্রিস। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডকে ২-১ ব্যবধানে হারায় পর্তুগাল। আর চেক রিপাবলিককে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে গ্রিস।
সেবার ফাইনালের আসর বসেছিল লিসবন স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠে ফাইনাল খেলার আগে সাজো সাজো রব। একই গ্রুপে থেকে ফাইনালে ওঠে পর্তুগাল ও গ্রিস। ফাইনালের ঠিক দুদিন আগে গ্রিসের খেলোয়াড়দের নিয়ে টিম মিটিংয়ে ডাকেন গ্রিস কোচ রেহগাল। গোলকিপার অ্যান্তোনিস নিকোপোলিডিস ও কনস্তান্তিনোসের বিতর্ক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে। কোচের হস্তক্ষেপে সেই শীতল লড়াই মেটে ফাইনালের আগে।
তখন দুরন্ত ফর্মে ফিগো, রোনাল্ডো, ডেকো ও পাউলেতা। এই পর্তুগাল টিমের সামনে কোনও ভাবেই ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল না যে কোনও প্রতিপক্ষের। সেই রোমহর্ষক ফাইনালে প্রথমার্ধে টানটান লড়াই হয়। পর্তুগাল বারবার গ্রিসের পাথুরে রক্ষণ ভেঙে উঠে আসে। কিন্তু গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধে খেলার শুরুর ১২ মিনিটের মাথায় এল ম্যাচের একমাত্র গোল। হঠাৎ কর্নার পায় গ্রিস। অ্য়াঞ্জেলো ক্যারিস্তিয়াসের হেড থেকে এগিয়ে যায় গ্রিস। সেবার ইউরো কাপে কর্নার থেকে হেড করে বারবার গোল করেছে গ্রিস। ফাইনালেও তার অন্যথা হয়নি।
৫৭ মিনিটে গোল খাওয়ার পর পর্তুগাল সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপায়। কিন্তু গ্রিসের রক্ষণ আর ভাঙতে পারেননি রোনাল্ডো-ফিগোরা। ম্যাচ শেষের পর একরাশ বিষাদের ছায়া তখন গ্যালারিতে। সেদিন সংবাদমাধ্যম ও ফুটবল বোদ্ধারা বিষয়টি হজম করতে পারেননি। পর্তুগালের মতো বড় টিমকে হারিয়ে রাতারাতি জায়ান্ট কিলার তকমা পায় গ্রিস। আন্ডারডগ হিসেবে টুর্নামেন্ট শুরু করার পর ইউরো চ্যাম্পিয়ন। ইউরো চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলগুলির মধ্যে সবথেকে কম গোল করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড গড়ে গ্রিস।