Barcelona Resurgence: স্প্যানিশ সুপার কাপে জয়, পরপর সাফল্য, কীভাবে হারানো জমি ফিরে পাচ্ছে বার্সেলোনা!

Updated : Jan 15, 2025 19:30
|
Editorji News Desk

সৌদি আরবের জেড্ডায় স্প্যানিশ সুপার কাপে এল ক্লাসিকো। তারকাখচিত রিয়াল মাদ্রিদকে ৫-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী বার্সেলোনা। জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক রাফিনহা। এল ক্লাসিকোতে নজর কেড়েছেন লামিনে ইয়ামাল। মেসি পরবর্তী যুগে নতুন বার্সেলোনা ধীরে ধীরে জাঁকিয়ে বসছে ফুটবল বিশ্বে। এক একটি সাফল্য যেন বলে দিচ্ছে, বড় ক্লাব কোনও ব্যক্তি নির্ভর হয় না। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের ঐতিহ্যকে বয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। 

জেড্ডায় সুপার কাপ ফাইনালে ম্যাচের ৫ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু সেই উচ্ছ্বাস মাত্র ১৭ মিনিট স্থায়ী ছিল। খেলা শুরুর ৫ মিনিটের মধ্যে ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া দল প্রথমার্ধের শেষে ১-৪ গোলে পিছিয়ে যায়।  তিন জনকে কাটিয়ে গোল করেন ইয়ামাল।  ১৪ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পায় বার্সেলোনা। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রবার্ট লেওনডস্কি। ৩৯ মিনিটে তৃতীয় গোল পায় বার্সেলোনা। মাদ্রিদের রক্ষণ ভেঙে জুলস কুন্দের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন রাফিনহা। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে শেষে বার্সার হয়ে শেষ গোল করেন আলেয়ান্দ্রো বালদে।  

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের ফল ৫-১ হয়ে যায়। দ্বিতীয় গোল পান রাফিনহা। রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে ফের ছেলেখেলা শুরু করে বার্সেলোনা। সেই সময় ভুল করে বসেন বার্সার গোলরক্ষক ওজসিয়েক শেজ়নি। গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে এমবাপেকে ফাউল করেন তিনি। যার ফলে লাল-কার্ড দেখতে হয়। শেজ়নি ফিরতেই বাধ্য হয়েই বার্সা ইয়ামাল ও গাভিকে তুলে নিতে বাধ্য হন কোচ হ্যানসি ফ্লিক। তাঁর পরিবর্তে গোলকিপার ইনাকি পেনা ও দানি অলমোকে নামাতে হয়। একজন ফুটবলার কমে যাওয়ায় ১০ জনের টিম নিয়ে একটু হলেও চাপে পড়ে বার্সা। এক গোল হজমও করতে হয় তাঁদের। বক্সের বাইরে একটি ফাউল থেকে ফ্রি কিক পায় রিয়াল মাদ্রিদ। গোল করেন রদ্রিগো। তাঁর বাঁক খাওয়া ফ্রি-কিক আটকাতে পারেননি ইনাকি পেনা। ৪৩ মিনিট ১০ জনে খেলে বার্সেলোনা। তবুও আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে পারেনি রিয়াল মাদ্রিদ। 

স্প্যানিশ সুপার কাপের ইতিহাস কী বলছে! 

১৯৮২ সালে শুরু হয় স্প্যানিশ সুপার কাপ। লা লিগা ও কোপা ডেল রে এই দুই টুর্নামেন্টের দুই দল সুপার কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হয়। ২০১৯ সাল থেকে এই টিমে চারটি দল অন্তর্ভুক্ত হয়। ঘরোয়া লিগের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স টিমও এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। ১৯৮২ সালে প্রথম সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়াল সোসিদাদ। দ্বিতীয় বছরই ১৯৮২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সেলোনা। এই টুর্নামেন্টে এই নিয়ে মোট ১৫ বার চ্যাম্পিয়ন বার্সা। ২০০৫ থেকে ২০১৯- এই সময়ের মধ্যে লিওনেল মেসির সময়ই আটবার সুপার কাপ জেতে বার্সা।  এদিকে প্রথম সুপার কাপ জিততে রিয়েল মাদ্রিদের সময় লেগে যায় ৬ বছর। ১৯৮৮, ১৯৮৯ ও ১৯৯০, তিন বছর পরপর সুপার কাপ জেতে তাঁরা। ১৯৯১ ও ১৯৯২ ফের সুপার কাপ জয় বার্সেলোনার। ১৯৯৩ সালে ফের চ্যাম্পিয়ন হয় রিয়েল মাদ্রিদ। এরপর টানা সাফল্য় নেই তাঁদের। ২০০৯-২০১২ সাল, তিন বছর টানা চ্যাম্পিয়ন হয় বার্সেলোনা। 

এল ক্লাসিকোর হার ভাল ভাবে নিতে পারেননি ফ্যানরা। বার্সেলোনার বিরুদ্ধে জেড্ডাতে ৫ গোল হজম করে চাপে এমবাপেরা। গত দুটি এল ক্লাসিকোতে সব মিলিয়ে ৯ গোল হজম করতে হয়েছে মাদ্রিদকে। এই পারফরম্যান্সে খুশি নন ক্লাব, সমর্থক, কেউই। ফুটবলার, কোচ, টিম ম্যানেজমেন্টের দিকে একাধিক আঙুল উঠছে।  কোচ কার্লোস অ্যান্সেলোত্তি ও টিম ম্য়ানেজমেন্টের উপর খুশি নন সমর্থকরা। শুধু কোচ বা টিম ম্যানেজমেন্ট নয়, রিয়েল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ়কে নিয়েও খুশি নন সমর্থকরা। অভিযোগ, গত কয়েকটি ট্রান্সফার উইন্ডোয় ভাল টিম গঠনের জন্য ব্যবহার করেননি তিনি। 

২০০৫-০৬ মরশুম। তখন ছিল বার্সেলোনার স্বর্ণযুগ। সেই সময় বার্সা টিমে খেলতেন লিওনেল মেসি, রোনাল্ডিনহো, স্যামুয়েল এটো, সিলভিনহো, ডেকোর মত তারকারা। অধিনায়ক কার্লোস পিওল। সেই সময় থেকেই বার্সেলোনার টিম নতুন রূপে তৈরি হওয়া শুরু হয়। ২০০৬-এ বার্সা টিমে এসে যোগ দেন আন্দ্রে ইনিয়েস্তা। ২০০৭-এ টিমে যোগ দেন থিয়েরি অঁরি। ২০০৮ সালে দলে যোগ দেন আরও এক স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকে। এসেছেন ইব্রাহিমোভিচ, ডেভিড ভিয়া, লুইজ সুয়ারেজ, নেইমারের মতো তারকা। অনেক তারকা এই সময়ে ক্লাবে যোগ দিয়েছেন ও ক্লাব ছেড়েছেন। তবে বার্সেলোনার স্তম্ভ হয়ে উঠেছিলেন লিওনেল মেসি। সেই মেসির আমলে সাফল্যের শিখরে উঠেছিল বার্সা। আপামর ফুটবলপ্রেমীরা সেই সময় বার্সেলোনার ফ্যান হয়ে যায়। ২০২১ সালে বার্সেলোনা ছেড়ে দেন লিওনেল মেসি। এরপরই ডাউনফল শুরু হয় বার্সার।

মেসি ক্লাব ছাড়ার পর এক ধাক্কায় বার্সেলোনার জনপ্রিয়তা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। গত কয়েকবছর লা লিগা, সুপার কাপ, স্প্যানিশ কাপের মতো টুর্নামেন্টে খুঁজে পাওয়া যায়নি বার্সাকে। কিন্তু ধীরে ধীরে নিজেদের গৌরব নতুন করে তৈরি করে বার্সেলোনা। বার্সার কোচ হ্যান্সি ফ্লিক জানান, বড় ক্লাবের লক্ষ্য সব সময় ট্রফি জয়। সেই কারণেই পরিশ্রম করতে হয়। বর্তমান টিমে অন্যতম তারকা লামিয়েন ইয়ামাল। ড্যানি ওলমো, রাফিনহা, রবার্ট লেওয়ানডস্কি,, গাভি- এই পঞ্চপাণ্ডবই এখন বার্সার স্তম্ভ। এঁদের হাত ধরেই কোচ হ্যান্সি ফ্লিক ধীরে ধীরে বার্সার হারানো সময় ফিরিয়ে দিচ্ছেন। মেসি পরবর্তী যুগে ক্লাব ফুটবলের দুনিয়ায় ধীরে ধীরে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাচ্ছে বার্সা। সেটাই যেন বড় পাওনা কাতালান সমর্থকদের।        

Barcelona

Recommended For You

editorji | খেলা

IPL 2025: আরসিবির বিরুদ্ধে হার কলকাতার, ইশান কিষাণের সেঞ্চুরি, কেমন হল প্রথম ম্য়াচ!

editorji | খেলা

LSG Team Preview: আইপিএলে সুপার জায়ান্টসের নতুন ভার্সন, ট্রফি এনে দিতে চান ঋষভ পন্থ

editorji | খেলা

India vs Maldives : প্রত্যাবর্তনেই সুনীলের গোল, অধিনায়ক ফিরতেই জয়ে ফিরল ভারত

editorji | খেলা

IPL Team Preview: আইপিএলে ছয়ের লক্ষ্য়ে দুই টিম, কেমন দল গড়ল সিএসকে ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্স!

editorji | খেলা

IPL Team Preview: জয়ই লক্ষ্য় ডিফেন্ডিং চ্য়াম্পিয়ন নাইটদের, ঘর গুছিয়ে ফিরছে রাজস্থানও