নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি। তার আগে গুরু গম্ভীরের পরীক্ষা নিউজিল্যান্ড। বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে বেঙ্গালুরু টেস্ট। তার আগে মেঘে ঢাকা শহর। অক্টোবরের এই সময়ে বৃষ্টি হয় দক্ষিণের এই রাজ্যে। মঙ্গলবার বিকেল থেকেই শুরু হয়েছে সেই বৃষ্টি। যার ফলে বেশিক্ষণ নেটে গা ঘামাতে পারেননি ভারতীয় ক্রিকেটাররা। স্থানীয় হাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাই মাঠে নামার আগেই প্রশ্নের মুখে এই ম্যাচের ভবিষ্যৎ।
কিউইদের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই বিরাট কোহলির মধ্যে রানের খিদে দেখতে পারছেন কোচ গৌতম গম্ভীর। দাবি করেছেন, টম ল্যাথামদের বিরুদ্ধে কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে না। বরং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ক্রিকেট খেলছে তাঁর দল, ঠিক সেই ক্রিকেটটাই এই সিরিজে খেলবেন তাঁর ছেলেরা।
ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজে সহজ জয় পেয়েছেন রোহিত শর্মারা। তরুণদের ব্যাটে রানের ফোয়ারা দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে কানপুরে টেস্ট ক্রিকেটের মঞ্চে টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং করে বিশ্ব ক্রিকেটকে চমকে দিয়েছিলেন রোহিত এবং যশস্বী। তবে, প্রাক্তনরা দাবি করছেন নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশ এক হবে না। এটা ঠিক শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে ভারতে টেস্ট খেলতে এসেছেন কিউইরা। তবুও, একটা লড়াই হবে বলে দাবি প্রাক্তনদের।
ষাটের দশক থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৬২টি ম্যাচ খেলছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এরমধ্যে ভারত জিতেছে ২২টি ম্যাচে। কিউইদের জয় ১৩টি ম্যাচে। ড্র হয়েছে ২৭টি টেস্ট ম্যাচ। পরিসংখ্যান বলছে, ঘরের মাঠে কিউইদের বিরুদ্ধে এগিয়ে ভারত। দেশের মাটিতে ভারতের জয় ১৭টি ম্যাচে।
২০২১ সালে ভারতে শেষবার টেস্ট খেলতে এসেছিল নিউজিল্যান্ড। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচে কিউইদের কার্যত দুরমুশ করেছিল টিম ইন্ডিয়া। ভারত সেই ম্যাচ জিতেছিল ৩২৭ রানে। তবে বেঙ্গালুরু টেস্ট খেলতে নামার আগে গুরু গম্ভীরের ভ্রু কুঁচকে যেতে পারে শেষ পাঁচটি ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখলে। শেষ পাঁচটি ম্যাচে ভারত জিতেছে মাত্র একটি ম্যাচ। কিউইদের জয় তিনটি ম্যাচে।
রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে, জাভাগল শ্রীনাথের আঁতুর ঘর বলা হয় চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামকে। আইপিএলের দৌলতে এই মাঠ এখন বিরাট কোহলির। সেই মাঠে ভারতের টেস্ট ভাগ্য মোটের উপর বেশ ভাল। মোট ২৪টি টেস্টে এই মাঠে ভারতের জয় ৯টি ম্যাচে। ড্র হয়েছে ৯টি ম্যাচ।
আজ থেকে এক দশক আগে ওয়েলিংটনের মাঠে ৫৫৯ বলে ৩০২ রান করেছিলেন কিউই ব্যাটার ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। ব্যক্তিগত ভাবে এটাই এখনও পর্যন্ত দু-দেশের টেস্ট ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। তবে রানের নিরিখে বাকিদের সবাইকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক ও কোচ রাহুল দ্রাবিড়। ১৫ ম্যাচে ১৬৫৯ রান দ্রাবিড়ের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। কিউইদের বিরুদ্ধে ২৪ টেস্ট খেলে মাস্টার ব্লাস্টারের মোট রান ১৫৯৫। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাকালাম।
উইকেট শিকারি হিসাবেও তালিকায় এখনও পর্যন্ত সবার শীর্ষে ভারতের রবিচন্দ্রণ অশ্বিন। ৯ ম্যাচে ৬৬ উইকেট অশ্বিনের। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রিচার্ড হ্যাডলি। ১৪ ম্যাচে ৬৫ উইকেট নিয়েছিলেন এই কিংবদন্তি। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক প্রয়াত বিষেণ সিং বেদী।
নতুন সময়। নতুন দল। কিন্তু ভারতের মাটিতে সময়টা ভাল যাচ্ছে না কিউইদের। প্রথম টেস্টে নেই কেন উইলিয়ামসন। এবার পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গেলেন পেসার বেন সিয়ার্স। তবে ভারতীয় স্কোয়াড এখনও চাঙ্গা। অপেক্ষা এখন মাঠে নামার। ভ্রুকুটি রয়েছে সেই বৃষ্টির।