বর্ষা বলুন বা শরৎ, শীত বা গ্রীষ্ম বাঙালির পছন্দের ডেস্টিনেশন দার্জিলিং। দৈনিক প্রায় হাজার হাজার পর্যটক দার্জিলিং আসেন। ছুটি-ছাটা ম্যানেজ করে বঙ্গবাসী হাওয়া বদলাতে ছোটেন দার্জিলিং। এদিকে উৎসবের মরশুমে এই সময় যাকে বলে ‘সিজন’ চলছে শৈলপুরীতে। শরৎ বিদায় নিয়েছে, হেমন্তের রেশ চারিদিকে। একটু শীতের পরশ পেতে পর্যটকদের ভিড় দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম সহ উত্তর পূর্বের সব শৈল শহরে।
আর দার্জিলিং-এর হেরিটেজ টয় ট্রেন। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর ইউনেস্কো ডিএইচআরকে বিশ্ব ঐতিহ্য তকমা দেয়। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে, ডিএইচআর বা খেলনা ট্রেন নামেও পরিচিত এই পরিষেবা। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ এর মধ্যে নির্মিত এটি প্রায় ৮৮ কিমি (৫৫ মাইল) দীর্ঘ। তাই দার্জিলিং গেলে জয়রাইডে ভ্রমণ মিস করতে চান না পর্যটকেরা। উৎসবের মরশুমে পর্যটকদের জন্য এক ঝলক টাটকা খুশির হাওয়া। উৎসবের সময় আরও বাড়ানো হচ্ছে টয় ট্রেনের সংখ্যা। পর্যটকদের চাহিদা মেটাতেই মূলত এই সিদ্ধান্ত। সোমবার থেকে চারটি ডিজেল ইঞ্জিন চালিত জয়রাইড চালু হয়েছে দার্জিলিং-এ। আগে ৮টি জয়রাইড চলত, আরও চারটি বাড়ানো হল। আগামী ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই বাড়তি টয়ট্রেন পরিষেবা পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
এই মুহূর্তে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয়ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ট্রেন চলছে কেবল দার্জিলিং থেকে ঘুম পর্যন্তই, সেখানে চাহিদা এতটাই তুঙ্গে যে কেবল ৮টা ট্রেন চলাচলে পর্যটকদের সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।
দার্জিলিং-এ যাওয়ার আগে জেনে নিন নতুন ট্রেনের টাইমিং:
০২৫৪৭ জয়রাইড সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ছাড়বে দার্জিলিং থেকে, ঘুমে পৌঁছবে ১০টা ৫-এ।
ওই ট্রেন আবার ঘুম থেকে ১০টা ২৫মিনিটে ছেড়ে ১০টা ৫৫-এ দার্জিলিং পৌঁছে যাবে।
০২৫৪৮ জয়রাইডটি সকাল ১১টা ২৫-এ দার্জিলিং থেকে ছেড়ে ১২টা ১০-এ ঘুমে পৌঁছে, ঘুম থেকে ১২টা ৩০-এ ছেড়ে বেলা ১টায় দার্জিলিং পৌঁছবে।
০২৫৪৯ জয়রাইড দার্জিলিং থেকে বেলা ১টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে ঘুমে পৌঁছবে বেলা ২টো ১০-এ। আবার ঘুম থেকে ছাড়বে বেলা ২টো ৩৫-এ দার্জিলিং পৌঁছে যাবে বেলা ৩টা ৫-এ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, “পর্যটন মরশুমে বাড়তি চাহিদা সামাল দিতেই আমরা এই জয়রাইড চালু করেছি। ৫ ডিসেম্বর অবধি চলবে। পরবর্তীতে এই সময় বাড়ানো হবে কি না ভেবে দেখা হবে।”
ঝাঁ চকচকে যাত্রী প্রতীক্ষালয়:
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের (NJP Station) এসি কোচ যাত্রী প্রতীক্ষালয় এখন চর্চিত দেশ বিদেশে। স্টেশনের সৌন্দর্য বাড়াতে রেলের তরফে টয়ট্রেনের আদলে প্রতীক্ষালয়টি তৈরি করা হয়েছে। টয় ট্রেনের আদলে তৈরি করা এই প্রতীক্ষালয় পৃথিবীর আর কোথাও নেই। স্টেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ঘণ্টায় ৫০ ও পরের ঘণ্টায় ৩০ টাকার টিকিটে প্রতীক্ষালয়ে সময় কাটাতে পারছেন যাত্রীরা।
তাই এই ছুটিছাটায় যদি দার্জিলিং প্ল্যান করেই থাকেন, তবে টয়ট্রেনের সফর কিন্তু কিছুতেই মিস করবেন না।