ভাইফোঁটার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাসভবনে হাজির দুই 'পুরনো' ভাই। ভাইফোঁটার দিন ভাইয়েদের উপস্থিতিতে গমগম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি । শুধু নিজের ভাই নয়। এই দিন উপস্থিত থাকেন দলের সহকর্মী দাদা-ভাইয়েরা। তাঁদের মঙ্গল কামনায় ফোঁটা দেন 'মমতা দিদি'। উপহার দেওয়া-নেওয়াও চলে । এবছরও তাঁর ব্যতিক্রম নয় । তবে, এবছরের ভাইফোঁটাটা একটু অন্যরকম, একটু স্পেশাল বলা যেতে পারে । সেইসঙ্গে রয়েছে বড় চমক । কারণ, বহুবছর পর ভাইফোঁটায় দিদির আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলেন মুকুল রায় । শুধু মুকুল নয়, ফোঁটা নিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাই স্নেহে দেখতেন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovan Chatterjee)। তৃণমূলে থাকাকালীন প্রত্যেক বছর দিদির বাড়িতে ফোঁটা নিতে যেতেন শোভন চট্টোপাধ্যায় । কিন্তু, প্রাক্তন মেয়র যোগদান গেরুয়া শিবিরে যোগদান করতেই দিদি-ভাইয়ের সম্পর্কে চিড় ধরে । কিন্তু, সময় এগিয়েছে, ধীরে ধীরে ভুল বোঝাবুঝির মেঘও কাটতে শুরু করেছে । আগেও দু-একবার দিদির সঙ্গে দেখা করেছেন শোভন । এবার ভাইফোঁটায় তাঁর উপস্থিতি দিদির সঙ্গে শোভনের সুসম্পর্কের ইঙ্গিত দিল । এদিন, সাদা পাঞ্জাবি পরে ভাইফোঁটা সেরে দিদির বাড়ি থেকে হাসিমুখেই বেরোতে দেখা গেল শোভনকে । সঙ্গে ছিলেন বৈশাখী । সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বৈশাখী বলেন, 'দিদির আর্শীবাদ বড় প্রাপ্তি। দিদি ও শোভনের টান অটুট।' শোভনের উপস্থিতি কোথাও যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে, তৃণমূলের হাত ধরেই ফের সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে পারেন শোভন । এমনই মত রাজনৈতিক মহলের ।
কালীঘাটের বাড়িতে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ল মুকুল রায়ের উপস্থিতি । তৃণমূলে থাকাকালীন মমতার ডান হাত ছিলেন মুকুল । প্রতি বছর ভাইফোঁটা নিতেন । কিন্তু, সেই মুকুল বিজেপিতে যাওয়ার পর সব সম্পর্কের সমীকরণ ওলট-পালট হয়ে যায় । যদিও বিজেপি ছেড়ে মুকুল তৃণমূলের উত্তরীয় পরেছেন বহুদিন । তবে, মুকুলের দলবদল নিয়ে নানা কথা উঠছে । সেসব পরের কথা । আপাতত,পুরনো দলে ফেরার পরে পুরনো আচারেও ফিরলেন মুকুল । তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রায় আট বছর পর দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটায় গেলেন মুকুল রায় । মুকুলকে যে মমতা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভাইফোঁটা নিতে, তা অনেকেই নাকি জানতেন না । দু'জনের মধ্যে কথাও হয়েছে । সামনেই আবার পঞ্চায়েত ভোট। কালীঘাটে মুকুলের উপস্থিতি অনেক সম্ভাবনা, জল্পনাকে উস্কে দিচ্ছে ।