আর জি কর কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআইয়ের হাতে এসেছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য । হাসপাতালগুলিতে থ্রেট কালচার-এর মতো বিস্ফোরক অভিযোগও উঠেছে । আর সেই অভিযুক্তের তালিকার শীর্ষে নাম রয়েছে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, অভীক দে-র । উত্তরবঙ্গ লবিতেও দু'জনের নাম রয়েছে । সিবিআইয়ের ব়্যাডারে রয়েছেন দু'জনেই । তাঁদের একাধিকবার তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । সম্প্রতি,অভীক দে সম্পর্কে স্বাস্থ্যদফতরকে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন এসএসকেএমের ডিন । রিপোর্টে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে,আর জি করের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার আগের দিন থেকে কাজে অনুপস্থিত রয়েছেন অভীক দে । অথচ, অনুপস্থিতির থাকলেও কাউকে কিছু জানানোর প্রয়োজন মনে করতেন না অভীক দে ।
৪ সেপ্টেম্বর রাজ্যের তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে চিঠি পাঠিয়েছিলেন এসএসকেএম-এর ডিন অভিজিৎ হাজরা । সম্প্রতি সেই চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে ।
রিপোর্টে অভীক দে সম্পর্কে কী কী উল্লেখ রয়েছে ?
৮ অগস্ট থেকে টানা অনুপস্থিত রয়েছেন অভীক
শল্য বিভাগের ট্রেনি হিসেবে ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেননি অভীক
স্নাতকোত্তর স্তরে কী বিষয়ে গবেষণাপত্র জমা দেবেন, তার সারাংশও কলেজে জমা করেননি
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, আধার যুক্ত বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থায় নিজেকে নথিভুক্ত করেননি
অভীকের বিরুদ্ধে চিকিৎসক মহলের আরও অভিযোগ, সবটা নিজের হাতের তালুতে রাখতেন অভীক । বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হবেন, সেই সিদ্ধান্তও নিতেন তিনি । আরএমও হয়ে পরীক্ষা-পরিদর্শকের ভূমিকা পালন করতেন । নিজের মর্জি মতো কলেজে যাতায়াত করতেন । আর কেউ যদি বিরুদ্ধাচারণ করত, তাহলে তাঁরা অভীকের রোষের মুখে পড়তেন । থ্রেট কালচারের শিকার হতে হত ছাত্র-ছাত্রীদের । পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে না, রেজিস্ট্রেশন ক্যানসেল করে দেওয়া হবে, এমন নানা হুমকিও আসত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ।
অভীক ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের আরএমও । এরপর এসএসকেএম থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি । আরজি কর কাণ্ডে তাঁর নাম উঠতেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে SSKM থেকে । চার সদস্যের চিকিৎসকদের টিম তৈরি করে তদন্ত চলছে। এই মুহূর্তে অভীকের হস্টেলে ঢোকাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা ।
বর্ধমান মেডিকেল কলেজেও বিস্ফোরক অভিযোগ পেয়েছে তদন্ত কমিটি । জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক ভবনের বেশ কয়েকটি ঘর দখল করে চলত রাতভর পার্টি, মদ্যপান। তিন-চারটি ঘর পাকাপাকিভাবে কব্জায় ছিল সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ অভীক দে ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের । এমনই লিখিত অভিযোগ আসে স্বাস্থ্য দফতরের চার সদস্যের তদন্ত কমিটির কাছে । প্রশাসনিক ভবনের ওই ঘরগুলিতে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি ছাত্রীদের জোর করে এবং ভয় দেখিয়ে ডেকে আনা হত। তাঁদের দিয়ে খাবার ও মদ পরিবেশ করানো হত বলেও অভিযোগ উঠেছে ।