দরজায় কড়া নাড়ছে দুর্গাপুজো। কিন্তু আকাশে বাতাসে এবার মেজাজ খানিক অন্যরকম। পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে দেবীপক্ষের সূচনা । দেবীপক্ষের শুরুতেই উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে বাঙালি । চলতি বছর মহালয়া পড়েছে গান্ধী জয়ন্তীর দিন, অর্থাৎ ২ অক্টোবর, বুধবার ।
পঞ্জিকা মতে, মনে করা হয়, দেবী কীসে আসছেন, আর কীসে যাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করে বাংলার পরিবেশ, প্রকৃতি ও সময়কাল । পাশাপাশি, প্রতিবার দুর্গাপুজোয় সপ্তমী ও দশমী কোন কোন বারে পড়েছে, তাও নির্ধারিত করে দেবী দুর্গার আগমন ও গমন ।
দেবীর আগমন-গমন কীসে?
চলতি বছর, দেবী দুর্গার আগমন হচ্ছে দোলায় । শাস্ত্রমতে, দোলায় মায়ের আগমন মানে মড়ক । অর্থাৎ যার ফল শুভ নয়। দুর্ভোগ ও দুর্যোগের সম্ভাবনা থাকে ।
দেবীর কৈলাশে গমন হচ্ছে ঘোটকে । যার ফলও শুভ নয় । ছত্রভঙ্গ, ছন্নছাড়া, ধ্বংসাত্মক ফল হয় । অর্থাৎ শাস্ত্রমতে এবার দেবীর আগমন ও গমন...কোনওটাই শুভ নয় ।
বিভিন্ন বাহন বেছে নিয়ে মায়ের আগমন এবং গমনের তাৎপর্য কী?
সর্বভারতীয় প্রাচ্যবিদ্যা আকাদেমির অধ্যক্ষ ডঃ জয়ন্ত কুশারীর মতে-
দেবী দুর্গা যদি রবিবার বা সোমবার আসেন বা যান, তবে তিনি হাতিতে আসবেন এবং যাবেন।
দেবী যদি আসেন মঙ্গল বা শনিতে তবে ঘোটকে যাবেন বা আসবেন।
বৃহস্পতি বা শুক্রতে আগমন বা গমনের জন্য দেবী আসেন দোলায়।
আর বুধে এলে বা গেলে নৌকা।
দেবীর বাহনের জন্য বসুন্ধরার উপর কী প্রভাব পড়ে?
'গজে চ জলদা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা।
ছত্রভঙ্গস্তুরঙ্গমে।
দোলায়াং মড়কং ভবেৎ।
নৌকায়াং জলবৃদ্ধি শস্যবৃদ্ধিশ্চ।'
কথিত বা প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, হাতি'তে এলে বা গেলে পৃথিবী হবে সুজলা-সুফলা-শস্যশ্যামলা। চাষের উন্নতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবে বসুন্ধরা।
দেবী ঘোড়ায় এলে বা গেলে ছত্রভঙ্গ হবে। অর্থাৎ, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ভাঙবে। প্রভাব পড়বে রাজনীতিতেও। লণ্ডভণ্ড হবে চারিদিক। মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব, সম্পর্কে একটা পাঁচিল তৈরি হবে।
মনে করা হয় দোলায় দেবী এলে দেখা দেয় মড়ক। চারিদিকে মৃত্যুমিছিল দেখা যাবে। অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটবে। অকালমৃত্য হবে, লোকক্ষয় হবে। দৈব দুর্বিপাক ঘটবে। হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাস।
দেবীর বাহন নৌকো হলে জলবৃদ্ধি ও শস্যবৃদ্ধি হবে। সুজলা সুফলা হবে পৃথিবী।