Laxmi Puja 2024: 'লক্ষ্মীমন্ত' লক্ষ্মীর কিন্তু দারুণ রাগ, সঙ্গে বুক ভরা অভিমানও, জানেন?

Updated : Oct 15, 2024 15:38
|
Editorji News Desk

দুর্গা পুজো শেষের যে শুন্যতা, যে বুক হু হু করা মন খারাপ, তাঁকে একটা দিনের জন্য হলেও একটু যেন পূরণ করে লক্ষ্মী পুজো। আশ্বিনের শেষ পূর্ণিমা, কোজাগরী পূর্ণিমায় এই পুজো হয়। ধন, সম্পত্তি, সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মী। পুরাণ বলে, লক্ষ্মী চঞ্চল, চপল। কিন্তু লক্ষ্মী রাগিও, আবার অভিমানীও, এ কথা জানতেন?

লক্ষ্মীর রাগ নিয়ে, পুরাণে রীতিমতো গল্প রয়েছে, সেই গল্পই আজ রইল এডিটরজি বাংলার দর্শক-পাঠকদের। রথযাত্রার দিন সাতেক পর আসে উল্টোরথ।

উল্টোরথের দিন যে জগন্নাথদেব বাড়ি ফেরেন, সে তো আমরা সকলেই জানি৷ কিন্তু জানেন কি বাড়ি ফেরার পর কেন তিন ভাইবোন জগন্নাথ, সুভদ্রা এবং বলরামদেব মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না? এর নেপথ্যে রয়েছে দেবী লক্ষ্মীর রাগ। অথবা অভিমান। রাগ কেন করেছিলেন লক্ষ্মী?  দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে রথে করে মাসির বাড়ি যাওয়ার আগের দিন জগন্নাথদেব তাঁর স্ত্রী লক্ষ্মীকে কথা দিয়েছিলেন, তিনি মোটেই দেরি করবেন না। পরের দিনই ফিরে আসবেন। কিন্তু চার দিন কেটে যাওয়ার পরেও পরেও তিনি না ফিরলে স্বামীর বিরহে উতলা হয়ে ওঠেন লক্ষ্মী।

জগন্নাথদেব কেমন আছেন, সেই চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে ছটফট করতে থাকেন মহালক্ষ্মী। অবশেষে পাঁচ দিনের দিন দেবী বিমলার পরামর্শে জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি গুণ্ডিচা মন্দিরে পালকি করে উপস্থিত হন তিনি। কিন্তু মহালক্ষ্মী আসছেন জানতে পেরেই গুণ্ডিচা মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেন জগন্নাথ। এমন কষ্ট করে আসার পর স্বামীর এমন আচরণ! জগন্নাথদেবের উপর মহালক্ষ্মী অত্যন্ত রেগে যান।

তাঁকে ভুলে গিয়ে জগন্নাথ মহানন্দে দাদা ও বোনের সঙ্গে সুখে দিন কাটাচ্ছেন বুঝতে পেরে ভীষণ অভিমান ও রাগ হয় মহালক্ষ্মীর। রাগের চোটে অনুচরদের নির্দেশ দিয়ে জগন্নাথের রথ নান্দীঘোষের কিছুটা অংশ ভেঙেও দেন তিনি। যদিও তারপরেই নিজের ভুল বুঝতে পেরে মূল রাস্তা দিয়ে না ফিরে অন্য এক ভেতরের রাস্তা দিয়ে একা ফিরে আসেন৷ পুরাণে এই ঘটনাই রথভঙ্গ নামে পরিচিত।

সপ্তাহখানেক মাসির বাড়িতে কাটিয়ে জগন্নাথ ফিরে এলেও লক্ষ্মীর অভিমান কমেনি। স্ত্রী রাগ করে থাকলে ঘরে ঢোকার সাধ্য থাকে কোন স্বামীর? সে তিনি যতই জগন্নাথদেব হোন না কেন! সেই কারণেই তিনদিন অপেক্ষা করতে হয় জগন্নাথকে৷ তাঁর সঙ্গেই অপেক্ষা করেন বলরাম ও সুভদ্রাও। স্বামীর কাছে স্ত্রীয়ের মানভঞ্জনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কী আছে? লক্ষ্মীর মান ভাঙাতে জগন্নাথ সঙ্গে নেন লক্ষ্মীর প্রিয় ভোগ- লক্ষ্মীবিলাস। দেবদেবীদের ভালোবাসাও যে সাধারণ মানুষের মতোই মান অভিমানের রসে টইটম্বুর, তার প্রমাণ এই কাহিনী।

তা এ হেন লক্ষ্মীর পুজো হয় কোজাগরী তিথিতে। ‘কোজাগরী’ শব্দের অর্থ ‘কে জেগে আছ’? হিন্দু পুরাণ বলে, আশ্বিনের এই পূর্ণিমার রাতে ধনদেবী এসে ঘরে ঘরে খোঁজ নিয়ে যান, কে জেগে আছে তাঁর জন্য। প্রচলিত বিশ্বাস, যে বা যারা সত্যিই জেগে থাকেন, মা লক্ষ্মী নাকি তাঁদের প্রতি প্রসন্ন হন। ধন, যশ, খ্যাতি, সুস্বাস্থ্যে ভরে ওঠে সেই সব পরিবার।

সারা দেশেই লক্ষ্মীপুজার চল আছে, কিন্তু কোজাগরী পূর্ণিমার এই পুজো বাংলার নিজের। আশ্বিনের হিমেল রাতে, কোজাগরীর জ্যোৎস্না ভাসা প্রান্তর পেরিয়ে গৃহস্থের দ্বারে দ্বারে লক্ষ্মী যেন বাংলার মেয়ে। কত হাজার বছর ধরে বাংলার সঙ্গে মিশে আছে এই লোকাচার। 

Laxmi

Recommended For You

editorji | লাইফস্টাইল

ঘটা করে আলাদা দিন, অথচ ছক ভাঙলেই প্রশ্নের মুখে মায়েরা! মাতৃদিবসের কড়া সত্যি এটাই

editorji | লাইফস্টাইল

Digha Jagannath Temple: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরেই চৈতন্য দেবকে খুন করা হয়েছিল? জেনে নিন রোমহর্ষক কাহিনী

editorji | লাইফস্টাইল

Jagannath: জগন্নাথই কৃষ্ণ, আবার তিনি আদিবাসীদেরও দেবতা! রইল নানা অজানা তথ্য

editorji | লাইফস্টাইল

Darjeeling Day tour: এক দুপুরে দার্জিলিং...বৈশাখের দাপটে পাহাড়ের রানি যেন একটুকরো স্বর্গ

editorji | লাইফস্টাইল

Offbeat Tabakoshi: মিরিকের কাছেই চা বাগানে ঘেরা তাবাকোশি যেন এক টুকরো স্বর্গ