দীপাবলি আলোর উৎসব। এই দিনে প্রদীপ, মোমবাতি এবং রকমারি আলো জ্বালানো পাশাপাশি আতসবাজিও পোড়ানো হয়। আর অনেক সময় এই আতসবাজি পোড়াতে গিয়েই নানা রকমের বিপত্তি বাধে। কারণ বাজি পোড়াতে গিয়ে বেখেয়ালে বা বাজি খারাপ থাকার কারণে হাত, মুখ এমনকি শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটে। তাই খুব সাবধানে বাজি পোড়ানো উচিত। কিন্তু তার পরেও যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে কী করবেন? আজ এডিটরজি-তে রইল পরিস্থিতির মোকাবিলা করার কয়েকটি সহজ উপায়।
১. বাড়ির ছোট বাচ্চাদের বাজি থেকে দূরে রাখা দরকার। খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চারা যেন নিজে হাতে বাজি না ধরায়। এমনকি বাজি ধরানোর সময় সকলেরই প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।
২. সবসময় সুতির জামা পরে প্রদীপ-মোমবাতি জ্বালানো কিংবা বাজি ফাটানো উচিত। এতে পোশাকে আগুন লাগার ভয় কিছুটা হলেও কম থাকে।
৩. বাজিতে আগুন দেওয়ার পর সেই বাজি যদি না ফাটে সেক্ষেত্রে ফের আগুন জ্বালাতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ এতে বিপদ হতে পারে।
৪. বাজি ফাটানোর পর যেখানে সেখানে পোড়া বাজি ফেলে রাখবেন না। বাজি ফাটানো হয়ে গেলে তা বালি চাপা দিয়ে দিন কিংবা পোড়া বাজির উপর জল ঢেলে দিন। এতে বিপদ এড়ানো সম্ভব।
৫. বাজি পোড়ানোর আগে হাতের সামনে ফার্স্ট এইড বক্স রাখুন। যে কোনও বিপদে আপদে চটজলদি প্রাথমিক চিকিৎসা সম্ভব হবে।
উপরোক্ত পাঁচ নিয়ম মানলে কিছুটা হলেও সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। কিন্তু তার পরেও যদি কোনও দুর্ঘটনা ঘটে সেক্ষেত্রে মাথায় রাখুন নিম্নলিখিত কয়েকটি টিপস।
১. বাজি পোড়াতে গিয়ে যদি কোনও ভাবে হাত কিংবা শরীরের কোনও অংশ পুড়ে গেলে প্রথমেই ঠাণ্ডা জল দিয়ে দিন। এতে ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া ভাব কমবে। ফোসকা পড়ার সম্ভাবনাও কমবে।
২. কোনও জায়গা পুড়ে গেলে হলুদ আর জল দিয়ে গুলে মিশ্রণ তৈরি করে পোড়া জায়গায় লাগিয়ে নিন। এতে কিছুটা উপশম মিলবে।
৩. প্রায় সব রান্নাঘরেই মধু থাকে। বাজিতে শরীরের কোনও অংশ পুড়ে গেলে আলতো করে মধু লাগিয়ে দিন। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে।
৪. বাজি ফাটাতে গিয়ে হাত কিংবা শরীরের কোনও অংশ পুড়ে গেলে ওই জায়গায় অ্যালোভেরা জেলও লাগাতে পারেন।
৫. ফুলঝুরি জ্বলাতে গিয়ে যদি কখনও চোখে আলোর ফুলকি ঢুকে যায় তাহলে কখনই চোখ ঘষবেন না। বরং চোখে ঠাণ্ডা জলের ঝাপটা দিন।
৬. বাজির আগুনে পুড়ে যাওয়া অংশে সিলভার সালফার ডায়োজিন বা ন্যানো সালফার জাতীয় মলম লাগিয়ে গজ কাপড় দিয়ে বেঁধে দিলে উপশম মিলবে।
৭. পুড়ে গেলে তীব্র যন্ত্রণা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভরসা রাখতে পারেন প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধে।
৮. পুড়ে যাওয়া জায়গা না শুকানো পর্যন্ত অন্য কোনও ক্রিম বা সাবান ব্যবহার করবেন না।
৯. টুথপেস্ট শুধুমাত্র দাঁত মাজার জন্য ব্যবহার করা হয় না। পুড়ে যাওয়া স্থানে টুথপেস্ট লাগালে জ্বালাপোড়া কমে।
১০. আগুনে পুড়ে যাওয়া অংশে নারকেল তেল লাগাতে পারেন। নারকেল তেলে ভিটামিন-ই থাকে। এটি ত্বকের পোড়া ডাগ কমায়।
১১. পুড়ে যাওয়া স্থানে আরাম পেতে কলার খোসা লাগাতে পারেন। এতে কিছুটা হলেও জ্বালাপোড়া ভাবে আরাম মিলবে।
শরীরের কোনও একটি অংশে পুড়ে গেলে আপনি বাড়িতেই চিকিৎসা করে নিতে পারেন। কিন্তু তবুও অন্তত একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।