এক বছর আগেও কৃষ্ণনগর চকবাজারের এই বাড়িতেই একমনে কাজ করতেন ডাক শিল্পী আশিস বাগচী। কর্মচারী-ব্যবসায়ী-খদ্দেরদের ভিড়ে গমগম করত এলাকা। কিন্তু সেসব আজ অতীত। গত বছর করোনারূপী মৃত্যুদূত হানা দেয় বাগচী পরিবারে। অকালেই চলে যেতে হয় পরিবারের এই একমাত্র রোজগেরেকে। পথে বসেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন কারিগর।
এরপরেই শুরু হয় আসল লড়াই। পরিবারকে বাঁচাতে বাবার দেখানো পথেই লড়াইয়ে নামে মেয়ে আবৃত্তি। বাবার স্মৃতি এবং এই শিল্পকে বাঁচানোর তাগিদে ভেঙে যাওয়া কারিগরের দলকে ফিরিয়ে আনেন তিনি। তাঁদের হাতে ফের যাবতীয় দায়িত্ব তুলে দিয়ে নিজে কাঁচামালের সন্ধানে ঘুরতে থাকেন কুমোরটুলির অলিগলিতে। প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে উঠে আবৃত্তির গত কয়েকমাসের লড়াইয়ে হাল ফেরে। ধীরে ধীরে নানা জায়গা থেকে বরাত আসতে শুরু করে। কথায়, কথায় আবৃত্তি জানান, এবার তাঁদের তৈরি দুর্গার ডাকের সাজ পাড়ি দেবে ভিন রাজ্যে। এখন তাই নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ তুলতে ব্যস্ত সমস্ত কারিগর।
একমনে কাজ করে চলেছেন আবৃত্তি। মাথার উপরের দেওয়ালে আটকানো ফটো ফ্রেমে বাঁধানো বাবার ছবি। বাবার অবর্তমানে এই শিল্পের মধ্যে দিয়ে বাবার স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে চান মেয়ে। পাশাপাশি নতুন করে আবার কাজ ফিরে পেয়ে কিছুটা স্বস্তিতে ডাকের সাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরাও।