রাস্তা থেকে উদ্ধার করা হল দুর্ঘটনায় আহত তিন জনকে। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল। পুলিশই তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করল। আহতদের থেকে বাড়ির ফোন নম্বর পাওয়া গেল। পুলিশ ফোনও করল। কিন্তু কেউ ধরল না। তারপর, হাসপাতালে শুয়ে পুলিশকে তাঁদের বাড়ির নম্বর দিলেন আহতরা। দুর্ঘটনার খবর দিতে ট্যাংরার সেই বাড়িতে গেল পুলিশ।
এরপর...।
দরজা খুলতেই স্থানীয় অংশু শূর লেনের মানুষ কার্যত থমকে গিয়েছেন। বুধবার এই পাড়ার এক চারতলা বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয়েছে তিন জনের দেহ। উদ্ধার দেহের মধ্যে একজন কিশোরী। প্রাথমিক ভাবে ট্যাংরা থানা থেকে পুলিশ আসে। তারপর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় লালবাজারের হোমিসাইড শাখার অফিসাররা।
কলকাতা পুলিশের যুগ্মকমিশনার রুপেশ কুমার প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন, ছ জনের পরিবার। তাঁরা একসঙ্গে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পায়েসে মেশানো হয়েছিল বিষ। দুই মহিলা তাঁদের হাতের শিরা কাটেন বলে দাবি করেন রুপেশ কুমার। বাকি তিন যুবক গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়।
ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের কাছে অভিষিক্তার সামনে সকালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গড়ফা থানার পুলিশ। সেখান থেকেই আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই সূত্র ধরে বাড়িতে এসেই তিন জনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে মৃত দুই মহিলার নাম রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে। আহত দুই ভাইয়ের নাম প্রণয় দে এবং প্রসূন দে। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে রুপেশ কুমার জানিয়েছেন, বাইপাসে গাড়িটিকে কেউ সামনে থেকে এসে ধাক্কা মারেনি। গাড়িটি গিয়ে থামে ধাক্কা মেরেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দে পরিবারের চামড়ার ব্যবসা। পাড়ায় বেশ পরিচিত ছিল। কিন্তু কেন এমন ঘটনা, সেটাই বুঝতে পারছেন না পাড়ার লোকেরা।
কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই ঘটনার পিছনে আর্থিক সমস্যা থাকতে পারে। হাসপাতালে পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন, এই ঘটনায় অন্যতম এক আহত। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক-অতীতে কলকাতার বুকে এমন হাড়হিম ঘটনা নেই। বুধবারের ট্যাংরার এই ঘটনা সেই অর্থে এক নতুন মাত্রা দিল। এমনিতেই গত কয়েকদিন ধরে শহরের বেশ কিছু এলাকায় অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। মনোজ ভার্মা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় প্রতিটি তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।