আরজি কর কান্ডের পরই সরকারি হাসপাতালে 'থ্রেট কালচার'-এর অভিযোগ তোলেন চিকিৎসকদের অনেক সংগঠনই। নাম জড়িয়েছিল বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের। আরজি কর হাসপাতাল, যেখানে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এসব কিছুর সূত্রপাত, এবার সেখানে থ্রেট কালচারের অভিযোগ জমা পড়ল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। ৫১ জনের নামও অভিযোগপত্রে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের তলব করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার স্পেশাল কাউন্সিল বৈঠকে এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। তারপরই নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার অধ্যক্ষের অফিস থেকে এই অভিযোগ নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। অভিযোগ, হাসপাতালের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছেন কয়েকজন চিকিৎসক। ফলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠিও দেন তাঁরা। তদন্ত কমিটি গড়ে এবার বিষয়টি দেখা হবে।
মোট ৫১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় আছেন হাউজস্টাফ, ইন্টার্ন চিকিৎসক, কয়েকজন চিকিৎসক পড়ুয়াও। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের নামের এক তালিকাও প্রকাশ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, এই তালিকায় অনেকেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ।
উল্লেখ্য, আরজি করের মহিলা চিকিৎসক খুনের ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন শুরু করেন। এরপরই আরজি করের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও প্রকাশ্যে আসে। এই মামলায় অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। অভিযোগ, সন্দীপ হাসপাতালে প্রভাব বিস্তার করে অনেক নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করতেন। তাঁর 'ঘনিষ্ঠ' লোকজন হাসপাতালে দাপিয়ে বেড়াত। সম্প্রতি আরজি করের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর কর্মবিরতি শুরু করেছেন সব মেডিকেল কলেজের পড়ুয়ারাই। এই ঘটনায় উঠে আসে অভীক দে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসদের মতো চিকিৎসকদের নাম। এবার 'থ্রেট কালচার' -এর অভিযোগে সরব হলেন আরজি করের চিকিৎসকরাও।
কী এই থ্রেট কালচার
আরজি কর কাণ্ডের পর থ্রেট কালচার নিয়ে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নাম তো জড়িয়েছে। নাম জড়িয়েছে বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দেরও। সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছিল বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের অডিয়ো। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় থাকলেও তাঁর প্রভাব ছিল জেলার একাধিক সরকারি হাসপাতালে। এমনটাই অভিযোগ করেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে থ্রেট কালচার চালানোর অভিযোগ করেছেন অনেকে। এদিকে রাজ্যের শাসকদলের প্রভাবশালী চিকিৎসক নেতা অভীক দের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ ওঠে। অধ্যাপকদের হুমকি দিয়ে নম্বর বাড়ানো, মার্কশিটে সাদাকালি দিয়ে নম্বর বসানো, পরীক্ষা চলাকালীন ফোন করে হল থেকে বেরিয়ে যাওয়া, একাধিক অভিযোগ ছিল তাঁর নামেও। সম্প্রতি SSKM হাসপাতাল ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসে তাঁর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।