কলকাতায় রকমারি থিমের ভিড়ে, আজও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কিছু সাবেক পুজো। বছরের পর বছর ধরে এইসমস্ত পুজোর ঐতিহ্যে একটুও ভাটা ফেলতে পারেনি থিমের পুজো। কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়ির পুজো। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ইতিহাস।
দেবীর বিশেষত্ব:
মূলত বোধন হয় ষষ্ঠীর দিন ,কিন্তু ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়িতে পুজো শুরু হয়ে যায় মহালয়া থেকেই। এই পুজো চলে দশ দিন ধরে। ১৮৫৫ সালে এই পুজো শুরু করেন দ্বারিকা নাথ দত্ত। প্রায় ১৭০ বছর ধরে এই পুজো চলে আসছে। এই বাড়িতে মায়ের রূপ মহিষাসুরমর্দিনী নয়। দেবী পূজিত হন কন্যা রূপে, মহাদেবের কোলে আসীন উমা। শিব -দুর্গা একইসঙ্গে পূজিত হন এই বাড়িতে। পুজো হয় বৈষ্ণব রীতি মেনে, কিন্তু অষ্টমী এবং নবমীর সন্ধিক্ষণে চামুণ্ডারূপে পূজিত হন দেবী।
জড়িয়ে থাকা ইতিহাস:
কথিত রয়েছে ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়ির বণিক দ্বারিকানাথ বিবাহ করার পর থেকেই তাঁর ব্যবসার উন্নতি শুরু হয়। এরপর থেকেই এইবাড়িতে পুজোর সংকল্প করা হয় মহিলাদের নামে। বাড়ির মহিলাদের মাথায় করে ধুনো পোড়ানোর রীতিও রয়েছে।
বাড়ি বৈষ্ণব, মায়ের পুজো চামুণ্ডারূপে:
চামুণ্ডার পুজো রক্ত মাংস ছাড়া সম্পন্ন হয় না। অথচ বৈষ্ণব বাড়িতে মাংস তো নৈব নৈব চ। উপায়? মাসকলাইয়ের ডাল দেওয়া হল ভোগ হিসেবে। হিন্দি শব্দে মাস শব্দের অর্থ মাংস। আর রক্তের বদলে ব্যবহার শুরু হল রক্তচন্দন। নবমীর দিন কুমারীর সঙ্গে সধবা পুজোও করা হয়। জন্মাষ্টমীর দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রতিমা তৈরির কাজ।