আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের ফের বৈঠকের আহ্বান মুখ্যসচিবের । সোমবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ফের বৈঠকের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের আহ্বান জানানো হয়েছে । ইতিমধ্যেই বৈঠক সংক্রান্ত ইমেইল মুখ্যসচিবের তরফে জুনিয়র ডাক্তারদের পাঠানো হয়েছে । ইমেইলে মুখ্যসচিবের তরফে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার উল্লেখ করে জানানো হয়, রাজ্য সরকারের তরফে এটাই পঞ্চম ও শেষ চেষ্টা । মুখ্যসচিব আরও জানিয়ে দিয়েছেন, বৈঠকে কোনও লাইভ স্ট্রিমিং বা ভিডিও রেকর্ডিং হবে না ।
উল্লেখ্য, আগে একবার নবান্নে বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল । কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল । লাইভ স্ট্রিমিংয়ের জটিলতায় দ্বিতীয়বার বৈঠক ভেস্তে যায় । সোমবার আবারও বৈঠকের জন্য ডেকে পাঠালেন জুনিয়র ডাক্তারদের । মুখ্যসচিব ইমেইলে লেখেন, আগের দিন ডাক্তারদের যে প্রতিনিধিরা বৈঠকের জন্য কালীঘাটে এসেছিলেন, তাঁদেরই সোমবারও আসতে অনুরোধ করা হচ্ছে । বিকাল ৪টে ৪৫ মিনিটের মধ্যে কালীঘাটে পৌঁছে যেতে বলা হয়েছে ।
মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ইমেইল লেখেন, 'গত ৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ১০ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে হবে। নাগরিক হিসাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালন করা আমাদের কর্তব্য। তাই এটা আপনাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক করানোর জন্য আমাদের তরফে পঞ্চম এবং শেষ চেষ্টা। খোলামনে আলোচনার জন্য কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, সুচিন্তার জয় হবেই ।'
উল্লেখ্য, শনিবার ৬টায় মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল । নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৪০ মিনিট পর কালীঘাটে পৌঁছন জুনিয়র ডাক্তাররা । মুখ্যসচিবের তরফে বৈঠকে ১৫ জনের প্রতিনিধি দলের অনুমতি দিয়ে মেইল করা হয় জুনিয়র ডাক্তারদের । কিন্তু, ৩০ জনেরই প্রতিনিধি দল পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে । সেখানে পৌঁছে আবারও লাইভ স্ট্রিমিং ও ভিডিওগ্রাফির দাবি তোলেন । কিন্তু, প্রশাসনের তরফে তা মেনে নেওয়া হয়নি । বৃষ্টির মধ্যেই অপেক্ষা করছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । এরপর কালীঘাটের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন, ভিতরে আসার অনুরোধ করেন । জুনিয়র ডাক্তারদের বোঝানোর চেষ্টা করেন । তাঁর অনুরোধ, তাঁরা যেন বৃষ্টিতে না ভেজেন । চা পানেরও অনুরোধ জানান । কেন লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয়, কেন ভিডিও তুলে দেওয়া হবে না, তাও ব্যাখ্যা করেন । তিনি জানান, ভিডিওগ্রাফি নয়, মিনিটস দিতে পারেন ।
এরপর আলোচনায় বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । তার কিছুক্ষণের মধ্যে কালীঘাট থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে । এরপরই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন জুনিয়র চিকিৎসকরা । তাঁদেব দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারের প্রতি সম্মান রেখে তাঁরা ভিডিয়োগ্রাফি ছাড়াই মিনিটস দেওয়ার শর্তে রাজি হয়েছিলেন । যখন আলোচনা করে জানাতে গেলেন, তখন হঠাৎ করে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বললেন, আর সম্ভব নয়। অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আলোচনায় বসতে রাজি নয় তাঁরা । জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, 'আমাদের এত সদিচ্ছা, এতটা নামলাম, এই অচলাবস্থা যাতে কাটানো যায়, তার জন্য সব শর্ত মানলাম, তার পর বলা হল, সম্ভব নয়! তার পর তাঁরা বেরিয়ে গেলেন।' ঘটনায় তাঁরা খুবই হতাশ বলে জানিয়েছেন ।