আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দুর্নীতির অভিযোগে জেল হেফাজতে রয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ । দুর্নীতির তদন্তে নেমে একাধিক হেভিওয়েটের নামও উঠে আসছে । সম্প্রতি, দুর্নীতি মামলায় সিবিআই ও ইডি-র ব়্যাডারে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায় । তাঁর সিঁথির মোড়ের ঠিকানায় একাধিকবার তল্লাশি চালিয়েছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা । তৃণমূল বিধায়ককে তলবও করা হয় । সম্প্রতি, তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন হাওড়ার সংস্থার প্রধান সুব্রত বসু । আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সন্দীপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চিকিৎসা সামগ্রী, যন্ত্রপাতি থেকে আসবাব...সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সুদীপ্ত রায়ের বিরুদ্ধে ।
আর জি কর হাসপাতালে দীর্ঘদিন জিনিসপত্র সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত সুব্রত বসুর সংস্থা । তাঁর অভিযোগ, আর জি কর থেকে নিয়ম করে সুদীপ্ত রায়ের নার্সিংহোমে যন্ত্রপাতি, ওষুধ এমনকী রোগীও পাঠানো হত । আনন্দবাজারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরনো চিকিৎসা সামগ্রী, যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র মেরামত ও রং করে নতুনের মতো করে তোলা হত । তারপর তা নতুন ট্যাগ লাগিয়ে কিছু সংস্থা থেকে কিনত আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল । সেই আসবাব ও যন্ত্রপাতিগুলি আবার সংশ্লিষ্ট সংস্থা সুদীপ্ত রায়ের সিঁথির নার্সিংহোমে পাঠাত বিনা পয়সায় । এভাবেই চলত দুর্নীতির চক্র । অভিযোগ, সন্দীপ ঘোষের দুর্নীতি চক্রে সক্রিয় ভূমিকা ছিল সুদীপ্ত রায়ের ।
আনন্দবাজারের রিপোর্ট অনুযায়ী, সুব্রত জানিয়েছেন, যন্ত্রপাতির যে সব পার্টস খোলা বাজারে পাওয়া যেত না, সেগুলি কোন কোন সংস্থায় মিলবে তা সন্দীপ ও তার সাঙ্গোপাঙ্গেরা তার কাছ থেকে জানত । তার পর সেই সংস্থাগুলোকে ডেকে গোপনে বৈঠক করত । যারা ওদের ৩০-৪০ শতাংশ কাটমানি দিতে রাজি হত, তাদের বরাত দেওয়া হত।
অভিযোগ, আর জি করের ট্রমা কেয়ার ইমার্জেন্সি থেকে বহু রোগীকে নিয়মিত সুদীপ্ত রায়ের নার্সিংহোমে পাঠানো হত । আবার নার্সিংহোমে হঠাৎ কোনও রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত আর জি করে পাঠিয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হত । আর জি করে নিযুক্ত সাফাইকর্মীদের অনেককেই সুদীপ্তের নার্সিংহোমে পাঠানো হয়েছিল । রোগী পাঠানোর কাছে তাঁদের ব্যবহার করা হত ।
সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুদীপ্ত রায় । তাঁর কথায়, যা বলা হচ্ছে, সবটাই মিথ্যা । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর বাড়িতে আর নার্সিংহোমে প্রায় ২০ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েও কিছু পাননি । সন্দীপ ভিতরে কী গোলমাল করছে, তাঁর পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না । এছাড়া, হাসপাতালের পরিচালনার কাজেও ঢুকতেন না বলে দাবি সুদীপ্ত রায়ের ।