মঙ্গলবারের নজরুল মঞ্চ। তৃণমূল কংগ্রেসের (Tmc) বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠক। সেইসব ছাপিয়ে একমঞ্চে দেখা গেল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে (Prasant Kishor)। সঙ্গে মঞ্চজুড়ে রইলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরাও। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই দুই তৃণমূল নেতার সঙ্গে পিকের দূরত্ব নিয়ে সম্প্রতি শাসকদলের অন্দরে নজিরবিহীন ভাবে রাজনীতিতে জোরালো জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শুধু পাশাপাশি বসে থাকা নয়, এদিন মঞ্চে একাধিকবার পিকের সঙ্গে কথাও বলতে দেখা গেল তৃণমূল নেত্রীকেও।
২০২৪ সালে লোকসভা ভোট এখনও অনেকটাই দেরি। কিন্তু তার আগে শুরু হয়ে গিয়েছে সলতে পাকানোর কাজ। এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে হবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তারজন্য আগে থেকেই অ-বিজেপি রাজনৈতিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় আনার প্রয়াস শুরু করেছেন তৃণমূলনেত্রী। আর এদিনের এই ছবি সেই প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। তাঁদের সাফ দাবি, এদিনের নজরুল মঞ্চে মমতা সঙ্গে পিকের উপস্থিতিতেই স্পষ্ট যাবতীয় দূরত্ব জল্পনায় ইতি পড়েছে। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ আবার দাবি করেছে, পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে পিকের সঙ্গে কোনও মতানৈক্য হয়নি। তাদের দাবি, সবটাই ছিল রটনা। তা অবশ্য মানতে চায় না তৃণমূলের আরেক পক্ষ। তাদের মতে, মতানৈক্য অবশ্যই হয়েছিল। কিন্তু তা মাত্রা ছাড়ায়নি। তাদের মতে, দলের বর্ধিত কর্মসমিতির বৈঠকের মঞ্চে পিকে-র উপস্থিতিই তার প্রমাণ। এদিনের মঞ্চে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু নজরুল মঞ্চে এদিনের বক্তা একজনই। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন : তাপসের জায়গায় সুদীপ, বাদ পড়লেন মহুয়া, ৫ জেলায় তৃণমূলের সভাপতি বদল
২০২১ বিধানসভা ভোটে বিশাল ব্যবধানে তৃণমূলের জয়ের মাত্র মাস ছয়েকের মধ্যেই ‘আইপ্যাক’-এর সঙ্গে রাজ্যের শাসকদলের সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়। তা আরও ইন্ধন পায় সদ্যসমাপ্ত ১০৮টি পুরসভা ভোটের আগে প্রার্থিতালিকা প্রকাশ নিয়ে। তৃণমূলের প্রবীণ নেতাদের একটা অংশ অভিযোগ করে, তাদের অজান্তে আইপ্যাক নিজেদের ইচ্ছে মতো প্রার্থিতালিকা তৈরি করেছে। এমনকি, পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, তাঁরা নতুন প্রার্থিতালিকা প্রকাশ করেন। মমতাও সেই প্রার্থিতালিকাকে চূড়ান্ত বলেই ঘোষণা করেন। তখনই মমতা-পিকে ‘দূরত্ব’ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। দলের একাংশ বলতে শুরু করে, পিকে-র সংস্থার কাজে ‘ক্ষুণ্ণ’ হন মমতা।