স্কুল নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে (SSC Group D Scam Investigation) সহযোগিতা করছেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এমনই দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। ইডি সূত্রে দাবি, স্কুল দুর্নীতিতে আরও অনেক প্রভাবশালীর নামও জড়িয়ে আছে। কিন্তু তদন্তকারী অফিসারদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না। 'মনে পড়ছে না', 'বলতে পারব না' বলেই এড়িয়ে যাচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)।
মঙ্গলবার ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রথম তদন্তে সহযোগিতা করতে চেয়েছেন। ইডি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হয়, কার কার থেকে সুপারিশ আসত তাঁর কাছে। তার জবাবে তিনি বলেন, সর্বস্তরে সুপারিশ পেতেন। যদিও কারা সুপারিশ করতেন, তা খোলসা করেননি তিনি। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় তদন্তকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন।
শুক্রবার টানা ১৯ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেফতার করা হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এরপর ভুবনেশ্বর এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে ফের কলকাতা আনা হয়। এদিকে পার্থকে ১০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। দলও সেভাবে পাশে দাঁড়ায়নি। সব মিলিয়ে মানসিক ভাবে বিধ্বস্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, একটু বিশ্রামের পর সঠিক জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: টেট দুর্নীতির তদন্তে নথি-সহ আজ ইডির দফতরে মানিক ভট্টাচার্যকে হাজিরার নির্দেশ
সোমবার বঙ্গভূষণ সম্মানের মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দুর্নীতি করলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। তিনি যখন ওই মন্তব্য করেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম করেননি। কিন্তু পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন। শুক্রবার মাঝরাতে যখন ইডি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার কথা জানায়, তখন 'পরমাত্মীয়' বলে দাবি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন তিনি। ইডি সূত্রে খবর, বেশ কয়েকবার ফোন করলেও, তা ধরেননি মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ইডির বিশেষ বিমানে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে পার্থ জানান, "তিনি ঠিকই বলেছেন।" রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিমানের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়। আবার অনেকে মনে করছেন, এখনও মন্ত্রিসভা থেকে এখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করেনি দল। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তি হবে। তাঁর মন্তব্যে কিছু হলেও আশ্বস্ত হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ওই বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরাও। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী জানান, পার্থবাবু এখনও আশা করে আছেন, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক বাঁচিয়ে নেবেন। তাই চারবার ফোনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এখন জরুরি, পিসি ভাইপোকে বাঁচানো। বাকিদের যা হয় হোক। সুজন চক্রবর্তীর দাবি, সব জেনে সাধু সেজে থাকতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জানান, "পার্থবাবু মুখ খুললে তৃণমূলের প্রায় গোটা দলটাই জেলে যাবে। তাই মুখ্যমন্ত্রী পার্থের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।"