বিভিন্ন অলি-গলিতে ধাক্কা খেয়ে বাঁক নিচ্ছে আরজি করের আন্দোলন। দীপাবলি পেরিয়ে নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে হওয়া মামলা ফের সুপ্রিম কোর্টে উঠবে। তার আগে হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে ভাগ এখন আড়াআড়ি। সম্প্রতি আরজি কর হাসপাতালে হয়ে গেল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরর্স ফ্রন্টের গণকনভেনশন। যেখানে এই আন্দোলনের শেষ দেখার শপথ নিয়েছেন কিঞ্জল নন্দ, অনিকেত মাহাত, দেবাশিস হালদাররা। ঠিক সেই দিনেই কলকাতার প্রেস ক্লাব থেকে জন্ম হল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের। সেখান থেকে আবার প্রশ্ন তোলা হল আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ আসফাকুল্লা নাইয়ার ভূমিকা নিয়ে।
অভিযোগ তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শ্রীশ চক্রবর্তী। শ্রীশের অভিযোগ, তাঁদের সন্দীপ ঘনিষ্ঠ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একসময় সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন আসফাকুল্লাও। কেন এই অভিযোগ ? শ্রীশের দাবি, একসময় কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আসফাকুল্লা। এবং সেইসময় ওই হাসপাতালের সুপার ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। এবং সেইসময় সন্দীপের যথেষ্ঠ ঘনিষ্ঠ ছিলেন আসফাকুল্লা, যা ওই কলেজের কোনও পড়ুয়া আজ অস্বীকার করতে পারবেন না বলেও অভিযোগ শ্রীশের। কিন্তু ফেসবুক লাইভে এসে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ আসফাকুল্লা।
জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠনের আহ্বায়ক শ্রীশ। তিনিও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার। তাঁর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ রয়েছে কিঞ্জল, অনিকেতদের। অভিযোগ, শ্রীশ আরজি করের থ্রেট কালচার তৈরির হোতা অভীক দের ঘনিষ্ঠ। সেই ছবিও ভাইরাল হয়েছে। যার সতত্যা যাচাই করেনি এডিটরজি বাংলা। কিন্তু শ্রীশ দাবি করেছেন, আরজি করের আন্দোলনের নামে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় ইচ্ছাকৃত ভাবে অরাজকতা সৃষ্টি করা হয়েছিল।
এই হচ্ছে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনে ঘটনায় আরজি করের অন্দরে ডাক্তারদের দুই সংগঠনের মধ্যে টানাপোড়েনের ছবি। আর বাইরে ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই অপেক্ষায় ছিল রাজনৈতিক মহল। কিন্তু তাঁরা কার্যত হতাশ। বেশ কয়েক বছর পর ফের বাংলা সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা অমিত শাহ। তাঁর কলকাতা সফরের আগে মেয়ের বিচার চেয়ে একবার দেখা করতে চেয়েছিল নির্যাতিতার পরিবার। অনুমতির জন্য ইমেলও করা হয়েছিল।
কিন্তু অমিত শাহ এলেন, দেখলেন, সন্দেশখালির সঙ্গে আরজি করকে এক ব্যাকেটে রেখে দিল্লি ফিরে গেলেন। বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েই ছিল তাঁর এবারের বাংলা সফর। রাজনৈতিক মহলের আগ্রহ ছিল তার ফাঁকে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে তিনি দেখা করেন কীনা। না সেই দেখা হয়নি।
বরং বিচার রয়ে গেল সেই প্রধান বিচারপতির এজলাসে। দীপাবলির পরে আবার অপেক্ষা করবে রাজ্য। তাকিয়ে থাকবে সুপ্রিম কোর্টের দিকে। সওয়াল-জবাব হবে। হয়তো এর মধ্যেই অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাবে আরজি করের আন্দোলন।