অপরিবর্তিত রইল লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে আজ, বুধবার রাজ্য বিধানসভায় শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এদিন বেলা চারটে নাগাদ বাজেট পেশ করতে গিয়ে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানালেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের চার শতাংশ হারে ডিএ বৃদ্ধি করা হল।
চন্দ্রিমার এই ঘোষণার পরেই বিরোধী বিজেপি বিধায়করা পার্টি গণিতের অঙ্ক কষতে বসে পড়েন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারিদের ডিএ ৫৩ শতাংশ। সেখানে চার শতাংশ বেড়ে রাজ্যের কর্মচারিদের ডিএ হল ১৮ শতাংশ। ফলে ফারাক দাঁড়াল ৩৫ শতাংশ।
তবে, লক্ষ্মীভাণ্ডারে বরাদ্দ অপরিবর্তিত রাখাকেই মমতা সরকারের এই বাজেটে অন্যতম চমক বলেই দাবি করল রাজনৈতিক মহল। তাঁদের একাংশের মতে, আগামী বছর নির্বাচনের আগে বিধানসভায় ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ করবে রাজ্য সরকার। সেখানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বরাদ্দ বাড়ার সম্ভাবনা রয়ে গেল বলেই দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
গত লোকসভা ভোটের প্রচার শুরুর আগেই মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন কেন্দ্র টাকা না দিলেও ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানে টাকা দেবে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতিতেই শেষ পর্যন্ত ঘাটাল থেকে ভোটে দাঁড়াতে রাজি হয়েছিল অভিনেতা-সাংসদ দেব। এদিনের বাজেটে ঘাটালের জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করল রাজ্য। টাকা বেড়েছে উত্তরবঙ্গ এবং পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়নেও।
দেখা ছিল সামাজিক সুরক্ষা এবং কৃষি উন্নয়নে কি কৌশল নেয় রাজ্য ? বাজেটে দেখা গেল, ১ কোটি ৮ লক্ষ কৃষককে দুই কিস্তিতে মোট ২৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। খরচ বৃদ্ধি করা হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পতেও। তবে, চমক বাংলার বাড়ির ক্ষেত্রে। অতিরিক্ত ১৬ লক্ষ উপভোক্তার বাড়ি জন্য ৯,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এছাড়া আগামী বছর ভোটের আগে বরাদ্দ বেড়েছে শিক্ষাতেও। বাজেটে আশা কর্মীদের স্মার্টফোন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন চন্দ্রিমা। ৭০ হাজার আশাকর্মীকে স্মার্টফোন দেওয়া হবে। গঙ্গাসাগরে সেতু তৈরি করতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
বাজেট শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি যা প্রতিশ্রুতি দেন, সেই কাজ করে দেখান। তাঁর সরকার বিজেপির মতো ফাঁকা আওয়াজ দেয় না। মমতা জানিয়েছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের খরচ হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর পাশাপাশি ঐক্যশ্রী প্রকল্প নিয়ে রাজ্যপালের ভাষণ প্রসঙ্গ এদিন তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।