প্রাক-দীপাবলিতে কলকাতা ফের গর্জে উঠছে আরজি কর আন্দোলনকে সামনে রেখে। ভূত চতুর্দশীর দিন ফের জ্বলবে দ্রোহের মশাল। সম্প্রতি অ্যাকাডেমিতে বৈঠক করে এক ছাতার তলায় এসেছে ডাক্তার ও নাগরিক সমাজ মিলিয়ে ৮০টি সংগঠন। তৈরি করা হয়েছে নয়া মঞ্চ। সেই মঞ্চের উদ্যোগে এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের নেতৃত্বে ডাক দেওয়া হয়েছে সিবিআই দফতর অভিযানের। সেখানেই মশাল মিছিল হবে। দাবি একটাই নির্যাতিতার দ্রুত বিচার।
একটা আন্দোলন। তাকে ঘিরে প্রায় রোজই তৈরি হচ্ছে একটার পর একটা নয়া সংগঠন। আরজি করের ঘটনায় প্রথমে জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের পাল্টায় তৈরি হয়েছিল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। এবার জন্ম নিল প্রোগেসিভ জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রথম দিনেই যারা দাবি করেছে, তারাই একমাত্র সরকারপন্থী সংগঠন। গত শনিবার জুনিয়র ডাক্তারদের অ্যাসোসিয়েশনের শুরু হয়েছিল, তাদের মধ্যে থ্রেট কালচার জড়িয়ে রয়েছে বলেই অভিযোগ করেছেন প্রোগেসিভের সদস্য। অতএব, জুনিয়র ডাক্তারদের তিনটি সংগঠন তৈরি হওয়ায়, আরজি কর আন্দোলনের জল আরও ঘোলা হল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজনৈতিক মহল দাবি করেছে, গত ৯ অগাস্ট থেকে সরকারি হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল, তা এখনও অনেকটাই স্তিমিত। কারণ, গোটা পরিস্থিতিতে জল মেপে এগিয়েছে নবান্ন। আন্দোলনকে মোকাবিলা করা হয়েছে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক ভাবে। আর তাই পুজো শেষ হতে এই আন্দোলনকে কার্যত গুটিয়ে ফেলতে রাশ নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ২১ অক্টোবর নবান্নের বৈঠকেই রাজ্যের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কী কী করণীয়, তা আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে টাস্ক ফোর্স গঠন করে সরকারি হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্যবাণ করতে ইতিমধ্যে ছ দফায় নবান্নের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কেন্দ্রীয় রেফারেল স্টিটেমকে আরও সংগঠিত করার দাবিও তোলা হয়েছে। দাবি তোলা হয়েছে রেফারের আসা রোগীর ভর্তির বিষয়টিকে আরও সহজ ও মসৃণ করার। মূলত হাসপাতালের বেডের কথা মাথায় রেখে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা দাবিতে জানিয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের ফ্রন্ট।
এসবের মধ্যেই আরও একদফায় সিজিও অভিযান। এরপর ফের জ্বলবে দ্রোহের আলো। যা সংগঠিত হবে আগামী সপ্তাহে। কর্মসূচিতে রয়েছে জয়নগর থেকে জয়গাঁও পর্যন্ত জাঠা। আর বিচার ? হয়তো দীপাবলির পর। এই মামলার শুনানি শুনতে ফের বসবে সুপ্রিম কোর্ট।