সন্দীপ ঘোষ। নাটকীয় ভাবে বলাই যায় নাম হি কাফি হ্যায়। যে আরজি কর ইস্যুতে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলায় প্রতিবাদের আগুন জ্বলছে, সেই ঘটনাতেই নাম জড়িয়েছে সন্দীপ ঘোষের। এবার সমস্যা হচ্ছে সন্দীপ ঘোষের সমনামীদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের নাম নিয়ে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে অন্য সন্দীপেরা। কেউ কেউ তো ফেসবুকে সরাসরি পোস্ট করে জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ নন।
আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত মহিলা চিকিৎসকের খুন এবং ধর্ষণের খবর সামনে আসার পর থেকেই আলোচনায় ছিলেন হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হন তিনি। অবশ্য তার আগেই ১ সেপ্টেম্বর আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির কারণে সন্দীপকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
খবরের শিরোনামে সন্দীপ ঘোষ থাকায় চূড়ান্ত অস্বস্তি সন্দীপ ঘোষের নেমসেকদের। একই নাম এবং একই পদবী! কোথায় মুখ লুকোবেন, ভেবে পাচ্ছেন না অনেকেই। কেউ কেউ ফেসবুকে নামের পাশে আলাদা করে উল্লেখ করে দিচ্ছেন, তিনি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ নন।
কারোর আবার নাম এক, পদবী আলাদা। তাঁরাও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাবা-মায়েদের উদ্দেশে বার্তা দিচ্ছেন, সন্তানের সম্ভাব্য নামের তালিকা থেকে সন্দীপ নামটা যেন বাদ না পড়ে। অর্থাৎ, নাম এক হলেও নামের সব মানুষগুলোর সঙ্গেই ঘৃণ্য কোনও অপরাধের নাম জড়ায় না, সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে চাইছেন সন্দীপেরা।
আরজি করের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে রোজই নতুন কোনও না কোনও তথ্য সামনে আসছে। এবার সিবিআই স্ক্যানারে সন্দীপের প্রাইভেট প্র্যাকটিস! সেখানকার প্রেসক্রিবশনে সন্দীপের রাজিস্ট্রেশন নম্বরের উল্লেখ থাকত না বলেই অভিযোগ। এমন কী পুরো নামও নাকি থাকত না, বদলে উল্লেখ থাকত ডঃ এস ঘোষ। অথচ ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ছাড়া প্রেসক্রিবশন দেওয়ার কথাই নয়।
সম্প্রতি সন্দীপের বিরুদ্ধে হংকং-এর এক পুরুষ নার্সকে বছর সাতেক আগে যৌন হেনস্থার অভিযোগের খবর নতুন করে সামনে এসেছে। এবার সন্দীপের ল্যাপটপ ঘেঁটে সিবিআই আধিকারিকরা একাধিক পুরুষের নগ্ন ছবি পেয়েছেন বলে খবর। এ ছাড়াও বহু আর্থিক লেনদেনের এক্সেল শিট পাওয়া গিয়েছে ল্যাপটপ থেকে।
বনগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্র হিসেবেই পরিচিত ছিলেন সন্দীপ ঘোষ। কৃতিদের তালিকার বোর্ডে জ্বলজ্বল করত তাঁর নাম। কিন্তু সেই তালিকা থেকে সন্দীপের নাম মুছে দেওয়ার জন্যে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত আবেদন জানান তাঁরই প্রাক্তন সহপাঠীরা। তাঁদের বক্তব্য, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্কুলকে সন্দীপ ঘোষের নামে তাঁরা চিনতে চান না।