অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও তাঁর বিপদ কাটেনি। এমনটাই জানালেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারেরা। শনিবার রাতে ধর্মতলার অনশনমঞ্চে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে রাতেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। সিসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে অনুষ্টুপকে। তাঁর শরীরের ভিতরে কোথাও রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে অনুমান চিকিৎসকদের। রবিবার পরীক্ষা করে দেখা হবে, কোথায় রক্তক্ষরণ হয়েছে।
শনিবার রাতে পেটে যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় অনশনকারী কলকাতা মেডিকেল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক অনুষ্টুপকে। গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় অনশনে বসেছিলেন তাঁরা। অষ্টম দিনের মাথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনুষ্টুপ। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর মলের রঙ কালো। চিকিৎসকদের অনুমান, শরীরের ভিতরে কোনও রক্তক্ষরণ হওয়ারই লক্ষ্যণ এটি। কোথা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা দেখতে রবিবার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হবে।
হাসপাতালে অনুষ্টুপকে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছে। জ্ঞানও রয়েছে, তবে এখনও তিনি দুর্বল। শরীরে জলশূন্যতাও আছে। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন, অবস্থা স্থিতিশীল। কলকাতা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, কোথাও রক্তক্ষরণ হলে মলের রঙ কালো হয়ে যায়। এন্ডোস্কোপি করে দেখা হবে, কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে কিনা। নাড়ির গতি, রক্তচাপ-সবই স্বাভাবিক রয়েছে। সোডিয়াম,পটাশিয়ামও পরীক্শা করা হয়েছে। আরও কিছু পরীক্ষা করা হবে। এই পর্যায়ে একটু গোলমাল হলে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টেরও সম্ভাবনা থাকে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। তাই চিকিৎসার সব দিক বিবেচনা করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে সময় লাগবে।
এর আগে ধর্মতলার অনশন মঞ্চে অসুস্থ হয়ে পড়েন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। আরজি কর হাসপাতালের সিসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে অনশনরত অলোক বর্মাও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রথম দিন থেকে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন স্নিগ্ধা হাজরা, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, তনয়া পাঁজা, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও পুলস্ত্য আচার্য। শুক্রবার রাতে মহাসমাবেশের পর তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন আরও দুই চিকিৎসক, আলোলিকা ঘোড়ুই ও পরিচয় পন্ডা।
পুজোর আগে থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। অনশন মঞ্চে পুজোর সময় যোগ দিয়েছেন অনেক সাধারণ মানুষ। ১০ দফা দাবি নিয়ে তাঁরা অনশন করছেন। এরই মধ্যে স্বাস্থ্যভবনে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠক হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। এরপর মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জুনিয়র ডাক্তারদের স্ট্যাটাস রিপোর্ট পাঠান। তাঁদের দাবি অনুযায়ী, সরকার কতটা কাজ এগিয়েছে, জানানো হয় জুনিয়র ডাক্তারদের।