মধ্যরাতে দানার হানা। বাংলা ও ওড়িশার উপকূল ছাপিয়ে আছড়ে পড়ল এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, স্থলভাগে আছড়ে পরার সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। এর জেরে উপকূলের উপরের বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামরা বন্দরের মধ্যভাগ দিয়ে বয়ে যায় এই ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশ। শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত এই ঝড়ে তাণ্ডব চলেছে বলে জানা গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সোমনাথ দত্ত জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হয়। তিনি জানিয়েছেন, শেষ ছ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার গতি বাড়ায় এই ঘূর্ণিঝড়।
সারারাত নবান্নে ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তীও। কন্ট্রোলরুমে বসেই উপকূলের জেলা গুলির উপর কড়া নজর রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝড় আসার আগেই তিনি নবান্নে জানিয়েছিলেন, উপকূল অঞ্চল থেকে লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় দানার ল্যান্ডফলের আগেই বাংলা ও ওড়িশার উপকূলের জেলাগুলিতে বাড়তে থাকে বৃষ্টির দাপট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়েছিল পুরীতে। সঙ্গে চলে দমকা হাওয়া। রাতেই উত্তাল হয়ে ওঠে দিঘার সমুদ্র। ভরা জোয়ারের জেরে তা ফুঁসতে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গেই বাংলার উপকূলের জেলাগুলিতে বাড়তে থাকে বৃষ্টি। মধ্যরাতে প্রভাব দেখা যায় কলকাতাতেও। সঙ্গে চলে দমকা হাওয়া। আবহাওয়াবিদ গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় দানার জেরে আজ, শুক্রবার কলকাতা ও তার পাশ্বর্বতী জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
ভোররাত পর্যন্ত চলা এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কত তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রবল বৃষ্টির জেরে বাংলা ও ওড়িশা, দুই রাজ্যেই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ভাঙতে পারে প্রচুর মাটির বাড়িও। যদিও, ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই বাংলা ও ওড়িশার উপকূল অঞ্চল থেকে ৫ লক্ষের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছিল।
সতর্কতা হিসাবে শিয়ালদহ ও হাওড়ার বেশ কিছু শাখায় রাত আটটার পর লোকাল ট্রেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পূর্বরেল। সন্ধে ছটার পর কলকাতা থেকে উড়ানও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তার আগে থেকেই বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল। এই পরিস্থিতি শুক্রবার মেট্রো চলবে বলেই জানানো হয়েছে।