বালিগঞ্জ বিধানসভা ভোটে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ। দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে ভুয়ো ভোটারকে তাড়াও করলেন এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রাথী সায়রা হালিম। তাঁর অভিযোগ, ওই স্কুলে বুথ জ্যাম করে ভুয়ো ভোট দিচ্ছিলেন তৃণমূলের এক মহিলা ভোটার। তাঁকে চ্যালেঞ্জ করতেই ওই স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যান ওই ভোটার। তাঁর পিছনে ছোটেন সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। কিন্তু নিমেশের মধ্যে ওই এলাকা থেকে উধাও হয়ে যান ওই মহিলা।
এদিকে, লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে বালিগঞ্জের সিপিএম প্রার্থী সায়রা হালিমের গাড়ি ভাঙচুড়ের অভিযোগ করা হয়েছে। সকালে পর দুপুরেও দেখা গিয়েছে ওই কেন্দ্রের একাধিক বুথে ঘুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়াদের সঙ্গে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ।
বেলা গড়াতেই উত্তাপ বাড়ে বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনকে ঘিরে। মঙ্গলবার সকালে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ভোট দেখতে গিয়ে বাধা পেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। লেডি ব্রেবোর্ন বুথের কাছে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন বালিগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। তবে এই কেন্দ্রে এখনও ভোটের লাইনে ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। সকাল থেকেই বাবুল বিভিন্ন বুথে ঘুরে ঘুরে ভোট পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। তবে সাউথ পয়েন্টের কাছে তাঁকে আটকানোও হয়। এই প্রসঙ্গে বাবুল বলেন, ‘‘ওরা ওদের কাজ করুক। আমি কোনও তর্কে যায়নি। ভোট শান্তিপূর্ণ হোক।’’
বেলা নটার কিছু পরেই, সাউথ পয়েন্ট স্কুলে উত্তেজনা দেখা দেয়। ফোন নিয়ে ভোটারদের বুথে ঢুকতে বাধা কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। বুথের বাইরে গণ্ডগোল করার অভিযোগ। কলকাতা পুরসভার সুর্দশনা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কমিশনে বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ। এদিকে সকাল সকাল পাঠভবনে ভোট দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য জায়া মীরা ভট্টাচার্য ও মেয়ে সুচেতনা। অসুস্থতার কারণে এবারও ভোট দিলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, বালিগঞ্জের ৩০০টি বুথের মধ্যে ২৩টি স্পর্শকাতর। ১০০ শতাংশ বুথেই CCTV নজরদারি থাকবে। ভোটের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছে ১৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতিটি বুথ ও বুথের বাইরে ২০০ মিটারের মধ্যে থাকবে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতি বুথে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই জওয়ান। ২০০ মিটারের বাইরে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ (West Bengal Police)।
অন্যদিকে, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রেও, ২ হাজার ১০২টি বুথই স্পর্শকাতর। ৫১ শতাংশ অর্থাৎ, দেড় হাজার বুথে থাকবে ওয়েব কাস্টিং ব্যবস্থা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, মোট ১৭ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৭৫ জন ভোটার প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। ভোটের কাজে রয়েছেন ১০ হাজার ৩২৭ জন কর্মী। ৫ জন পর্যবেক্ষকের পাশাপাশি, রয়েছেন ৪৪২ জন মাইক্রো অবজার্ভার।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে কোনওদিনই জয় পায়নি তৃণমূল কংগ্রেস। বামেদের থেকে বিজেপি নিয়েছে এই আসন। দোলা সেন, মুনমুন সেনের মতো দুই প্রার্থীই দুবার বিজেপিতে থাকাকালীন বাবুল সুপ্রিয়োর কাছে হেরে গিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব যাবার পর অনেক জলঘোলা শেষে বিজেপি সংসদ পদ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বাবুল। ঘটনাচক্রে দুবারের সেই আসানসোল জয়ী বাবুল এবার বিজেপির বিরুদ্ধেই লড়বেন বালিগঞ্জ উপানির্বাচন থেকে। এবং তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে তৃণমূলের হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা।