এ লড়াই লড়তে হবে। এ লড়াই জিততে হবে। সালটা ছিল ২০১৫। ব্রিগেডের ময়দানে শেষবার এসে এই স্লোগানই তুলেছিলেন প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং সিপিএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। নয় বছর পর বৃহস্পতিবার তাঁর স্মরণসভায় সেই স্লোগান ফের তুলল তাঁর দল সিপিএম। এখানে লড়াইয়ের অর্থ কী ? নেতাজি ইন্ডোর সমস্বরে গর্জে উঠে বলল, আরজি কর, আরজি কর।
কথা ছিল সভা শুরু হবে বেলা আড়াইটে নাগাদ। সব কিছু গুছিয়ে তা শুরু হতে আরও কুড়ি মিনিট লেগে যায়। পরিবার, সিপিএম নেতৃত্বের পাশাপাশি প্রিয় নেতার স্মরণসভায় হাজির ছিলেন বাংলার মহারাজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। ইচ্ছা ছিল ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে নিয়ে একটা উপন্যাস লেখার। শুরুও করেছিলেন। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেই কাজ আর শেষ করা হয়নি। সাহিত্যিক বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে এটাই স্মরণ স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্যের।
তবে মঞ্চে নয়, নীচে বসেই বুদ্ধদেব সম্পর্কে মানুষের মতামত শুনলেন মীরা ভট্টাচার্য। মঞ্চে তখন প্রাক্তন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, বর্তমান চেয়ারম্যান সূর্যকান্ত মিশ্র এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। অসুস্থতার কারণে কলকাতায় আসা হয়নি সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির। দিল্লি থেকে দিয়েছেন ভিডিও বার্তা।
প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর স্মরণসভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতাদের। তাঁর শাসনকাল নিয়ে কখনও সিপিএমের অন্দরে আবার কখনও বাইরে থেকে অনেক প্রশ্নই উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছিল সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে তৎকালীন সরকারের পদ্ধতিগত ভুল নিয়েও। প্রয়াত নেতাকে স্মরণ করতে গিয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের উপলব্ধি, দোষে-গুণেই মানুষ। যে স্বপ্ন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দেখেছিলেন, তাতে অসততা ছিল না। কারণ, তিনি চেয়েছিলেন শিল্পের হাত ধরে বাংলা বাঁচুক। নিজেদের পায়ে দাঁড়াক নতুন বাংলার পরবর্তী প্রজন্ম।