দু-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া মোটের উপর নির্বিঘ্নে মিটল রাজ্যের চার কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত গড়ে ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ। এরমধ্যে রায়গঞ্জ সবার শীর্ষে। সেখানে ভোট পড়েছে ৬৭ শতাংশ। কলকাতার মানিকতলায় ভোটের ৫১ শতাংশ। ভোট শেষের আগেই এই কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। কল্যাণের এই দাবিকে হারের অজুহাত বলেই পাল্টা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা, নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এবং কলকাতার মানিকতলা, বুধবার ভোট ছিল এই চার কেন্দ্রে। এই উপ-ভোটে সবার নজর ছিল উত্তর কলকাতার কেন্দ্র মানিকতলার উপরে। যেখানে সকাল থেকেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। তাঁর বিরুদ্ধে চোর স্লোগান ওঠার অভিযোগ করা হয়েছে। মানিকতলা থেকে কাঁকুড়গাছি পর্যন্ত একদা ভারতের গোলকিপারকে এদিন কার্যত বোতলবন্দি করে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় বিজেপি প্রার্থীকে।
যদিও জেলায় ভোটের আগের দিন থেকেই তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছে বিজেপি। রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের পূর্ণনগরে বিজেপি এজেন্টের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। ভোটের আগে রাতে ওই বাড়িতে তৃণমূল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই কেন্দ্রের একটি বুথে ভোট দেখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের প্রতিরোধে মুখে পড়তে হয়েছে বিজেপি প্রার্থীকে। বুথের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি প্রার্থী মনোজকুমার বিশ্বাস। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে ভুয়ো ভোটার ধরতে গিয়ে বিজেপি প্রার্থীকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বাগদাতেও ছবিটা ছিল এক।
উপ-নির্বাচনেও তৃণমূলের সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, সকাল থেকেই এই চার কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে তাণ্ডব করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা। সুকান্তকে পাল্টা জবাব ফিরিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর দাবি, হারের ভয়ে এখন থেকে ছুত খোঁজার চেষ্টা করছে বিজেপি।
নজর এখন ১৩ জুলাইয়ের দিকে। গত বিধানসভায় মানিকতলা ছাড়া বাকি তিনটি কেন্দ্রেই জিতেছিল বিজেপি। রাজনৈতিক মহল, এবার এই তিনটি কেন্দ্রে হাওয়া বদলের ইঙ্গিত পাচ্ছেন। একইসঙ্গে তাকিয়ে রয়েছেন বাগদার দিকে। যদি এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর নির্বাচিত হন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি হবেন সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক।