ফের ভোট-বাদ্যি রাজ্যে। আরজি করের ঘটনার পর এই প্রথম। যার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। রাজ্যের ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী তালিকা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে শাসক তৃণমূল। ভরসা এবার স্থানীয় মুখ। গত বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের ফল বলছে, আগের তুলনায় উত্তরবঙ্গে মাটি অনেক হালকা হয়েছে বিজেপির। কিন্তু কলকাতা এসে উপ-নির্বাচন নয়, ২০২৬ সালের রাজ্যের বিধানসভা ভোটকেই এখন থেকে ফোকাসে রাখতে নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা অমিত শাহ।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, গত লোকসভা ভোটের পর থেকেই বিজেপির শীর্ষ নেতারা কার্যত বুঝেছেন, উপ-নির্বাচনে সময় ব্যয় করে কোনও লাভ হবে না। কারণ, গত উপ-নির্বাচনে রাজ্যে চার-শূন্যে পিছিয়ে পদ্ম শিবির। বঙ্গ বিজেপিকে হতাশ করেছে বাগদা, বরাহনগর এবং মানিকতলার ফল। তাই, এবারের বঙ্গ সফরে এসে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের এখন থেকেই বিধানসভার জন্য কোমর বাধার নির্দেশ দিলেন অমিত শাহ।
তবে, এবারের সফরের অমিত শাহের থেকে আরও কিছু আশা করেছিল রাজনৈতিক মহল। তাঁরা আশা করছিল, বাংলা থেকে তৃণমূলকে উৎখাতে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের নতুন কোনও ফর্মূলা দেবেন অমিত শাহ। কিন্তু আখেরে দেখা গেল, সেই অভিষেক বৃত্তেই আটকে রইলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কিন্তু কোথায় গেল আরজি কর ? অমিত শাহের বঙ্গ সফরের মাঝেই একযোগে এই প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস এবং সিপিএম। যদিও আরজি করের ঘটনায় গোড়া থেকেই বিচ্ছিন্ন দেখিয়েছে বিজেপিকে। এই আন্দোলনে বারবার রাজনীতির থেকে অরাজনৈতিক পটভূমি তৈরির চেষ্টা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই প্রেক্ষাপটেই আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
গত ১২ অগাস্ট নির্যাতিতার বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার পর অনেক বিজেপি নেতাকেই ওই বাড়িতে যেতে এবং আসতে দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি দুর্গাপুজোর সময় নির্যাতিতার পরিবারের ধরনা মঞ্চে গিয়ে দেখা করে এসেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও। গত কয়েকদিন আগে মেয়ের বিচারের দাবি অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা। অনুমতির জন্য ইমেলও করেছিলেন।
এবারের বিধানসভার উপ-নির্বাচনে ৫-১ পিছিয়ে থেকে শুরু করবে বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটে একমাত্র মাদারিহাট ছিল তাদের দখলে। যেখানে মনোজ টিগ্গার ঘনিষ্ঠকেই এবার মুখ হিসাবে তুলে ধরেছেন পদ্ম নেতারা। উপ-নির্বাচন নয়, এখন থেকেই ফোকাস করতে হবে মূল বিধানসভা ভোটের দিকে। শাহি পেপটকে নতুন করে আদা-জল খাওয়ার শপথ বঙ্গ বিজেপির। তাদের মাঠে নামার আগেই বিজয়া সম্মেলনী থেকে টার্গেট ঠিক করে ফেলল বাংলার শাসক তৃণমূল। এবার টার্গেট ২৫০।