Kolkata Tram: উঠে যাচ্ছে না, জানান দিতে ফের ট্র্যাকে 'নস্টালজিয়ার' ট্রাম

Updated : Oct 23, 2024 18:35
|
Editorji News Desk

সিটি অব জয়, ব্যস্ত এই শহর ঘুমোতে ভুলে গিয়েছে অনেকদিন। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘কলিকাতা চলিতেছে নড়িতে নড়িতে’ । কিন্তু এখন আর কলকাতার নড়ার জো নেই, বরং সে ছুটছে অবিরাম। আর এই শহরের নস্টালজিয়ার দলিল হিসেবে হলুদ ট্যাক্সি, টানা রিকশার মতোই থেকে যাবে আরও এক ‘রূপকথা’র কথা। কলকাতার ট্রাম। গোটা এশিয়ার মধ্যে এই শহরের রাজপথেই প্রথম বার ছুটেছিল ইলেকট্রিক ট্রাম। এই শহরের ইতিহাসের পাতায় ১৫১ বছরের একটি অধ্যায় রয়েছে ট্রামের। সেই ট্রাম বন্ধ হতে চলেছে শুনে, উৎসবমুখরিত কলকাতাতেও মাথাচাড়া দিয়েছিল বিরুদ্ধতা। তারপরেও স্বাধীনতার পর থেকে প্রথম বারের জন্য ১৩ দিন গড়ায়নি ট্রামের চাকা। 


কলকাতার বয়স বাড়ছে, বুড়ো হচ্ছে শহর, অভিজ্ঞতা যেমন বাড়ছে, রোজ পুরনো কত কিছু বাতিল হচ্ছে একটু  একটু করে। দম দেওয়া দেওয়াল ঘড়ি, দোতলা বাস, টেলিগ্রামের মতো হারিয়ে যেতে বসেছিল ট্রামও। ২৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৭৩। কলকাতার রাজপথে প্রথমবার চলল ট্রাম।  শিয়ালদহ থেকে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত।  ১৮৮০-র ২৭ নভেম্বর কলকাতায় ঘোড়ায় টানা ট্রামের চলাচল শুরু হয়। বর্তমানের যে বিদ্যুৎচালিত ট্রাম শহরবাসী দেখতে অভ্যস্ত, তা শুরু হয় ১৯০২ সালে। নস্টালজিয়ার গন্ধ মাখানো এই দুই কামরার যান ক্যামেরায় ধরেছেন মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে হালফিলের অনুরাগ বসুরাও। এক সময় কলকাতাবাসীর যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল ট্রাম। এক পয়সা ট্রামের ভাড়া বাড়লেও, তৎকালীন সময়ে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে যেত শহর কলকাতার বুকে। 


সেই ট্রামের চাকা আর গড়াবে না, ঘোষণা করা হয়েছিল এমনটাই। পুজোর সময় যানজট এড়াতে, ঐতিহাসিক ট্রামের ট্রামের চাকা গড়ায়নি প্রায় দুই সপ্তাহ। অবশেষে ১৩ দিন পর, মঙ্গলবার  শ‌্যামবাজার-ধর্মতলা এবং গড়িয়াহাট-ধর্মতলা রুটে ট্রাম চলতে দেখা যায়। বুধবার থেকে টালিগঞ্জ-বালিগঞ্জ রুটেও ট্রাম ছোটা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন পরিবহণ নিগমের আধিকারিকরা।


পরিবহন দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৯ থেকে ১৫ অক্টোবর বন্ধ ছিল ট্রামের চাকা। শহরবাসীর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে আর কোনওদিন ট্রামে তাঁরা চড়তে পারবেন কিনা। শহরের বুকে নেমেছিল মিছিলও। সেই সময় সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, আদালতের রায় দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 


তবে এখনও ট্রামের উজ্জ্বল কোনও ভবিষৎ দেখা যাচ্ছে না। আগামী প্রজন্ম কি আর চোখেও দেখতে পাবে না এই যান? নাকি কেবল জয়রাইড হয়েই থেকে যাবে বাঙালির জীবনের ঐতিহ্যময় ও চিরকালীন স্মৃতিবাহী ট্রাম? 'ডারউনের তত্ত্ব সারভাইভাল অফ দি ফিটেস্ট। সময়ের চোখে যোগ্যতমই জায়গা করে নেই। কিন্তু এই আধুনিক সময়ে এই দ্রুত আরও দ্রুত বেঁচে থাকায় কে ঠিক করবে যোগ্যতম কে? রাস্তা বাড়েনি, কিন্তু যান বেড়েছে, তাই অপেক্ষাকৃত ধীর গতির ট্রামকে জায়গা করে দিতে হচ্ছে দ্রুত গতির বাস, ট্যাক্সিকে। এসবের মাঝেই তিলোত্তমার বুকে ঘণ্টা বাজিয়ে কোনওক্রমে চলছে ট্রাম'।---'ডারউনের তত্ত্ব 'সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট' বা 'যোগ্যতমের উদবর্তন'-এর নীতি মেনেই আমাদের ক্রমে বেড়ে চলা দ্রুতগতির জীবনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরেই কলকাতার পরিবহণ-মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিল বারো চাকার এই যান। কিছু মানুষ তবু রুখে দাঁড়ালেন। মানুষ যেমন রুখে দাঁড়ায়। দুনিয়ার বহু আধুনিক শহরে এখনও চলে ট্রাম। কলকাতা সময়ের সঙ্গে আরও আধুনিক হবে কি না, তার উত্তর অজানা। তবে, ইতিহাস যে এই শহরের বুক থেকে এত সহজে হারিয়েও যাবে না কখনও, তার অন্যতম বড় প্রমাণ হল তিলোত্তমার রাজপথে ফের ট্রামের ফিরে আসা'।

Kolkata Tram

Recommended For You

editorji | কলকাতা

Jadavpur University: 'অচল' যাদবপুরে নয়া চাঞ্চল্য, রাজের উগ্র বোমা, নিজের পাড়াতেই 'Wanted' ব্রাত্য

editorji | কলকাতা

Tangra Murder Case : পুলিশের গাড়িতে বাড়ি ফিরলেন প্রসূন, ট্যাংরার ঘটনায় পুলিশের পুনর্নির্মাণ

editorji | কলকাতা

Mamata Banerjee : এপি সেন্টার মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুর, ভোটের আগে ভুয়ো ভোটারের জাল, বিজেপির বিরুদ্ধে

editorji | কলকাতা

Abhishek Banerjee : টার্গেট ২১৫, নেতাজি ইন্ডোর থেকে বিধানসভার লক্ষ্য স্থির করে দিলেন অভিষেক

editorji | কলকাতা

Madhyamgram Murder : কী ভাবে আহিরীটোলা চিনলেন ফাল্গুনী-আরতি ? মধ্যমগ্রাম-কাণ্ডে উদ্ধার সেই ইট