করোনাকেই মূলধন করেছিল আমির খান। শনিবার গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলি থেকে টাকা উদ্ধারের পর এই দাবি ইডির। শনিবার আমিরের বাড়ির খাটের তলা থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। তদন্তকারীদের দাবি করোনার সময় মানুষ ঘরবন্দি ছিলেন। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন বন্দর এলাকার এই যুবক। গেমি অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার জাল বিছিয়েছে। ওই সময় আম জনতাকে তিন থেকে চার হাজার টাকা উপার্জনের লোভ দেখিয়েই কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছে আমির খান।
ইডি আধিকারিকদের নজর এবার আমির কবে কবে টাকা তুলত তার হিসেবের দিকে। সেই তথ্য ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই পেয়েছেন তদন্তকারীরা। লোক ঠকানোর উদ্দেশ্যেই এই গেমিং অ্যাপটি বানিয়েছিল আমির। প্রাথমিক ভাবে মোবাইলে এই গেম যাঁরা খেলতেন, তাঁদের আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হত। লোভনীয় কমিশনও মিলত। তা দেখেই অ্যাপটির প্রতি সাধারণ মানুষের ঝোঁক বাড়ে বলে দাবি ইডির। এই গেম খেলার পর ওয়ালেটে যে পরিমাণ টাকা জমত, তা সহজেই বিনা বাধায় তুলে নিতে পারতেন গ্রাহকরা। ফলে খেলাটির প্রতি আরও বেশি করে আকৃষ্ট হতেন অনেকে।
ই-নাগেট গেমিং অ্যাপ। এ ভাবেই শহর এবং শহরের বাইরে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল ঘিঞ্জি এই গলির বাসিন্দা আমির খান। তার বাবা নিসার আহমেদ খান, পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী। শনিবার সকালে কলকাতার বাকি পাঁচটা জায়গার সঙ্গে আমিরের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি। এই ঘটনায় আগেই পলাতক আমির। কারণ, ২০২১ সালে তার বিরুদ্ধে পার্ক স্ট্রিট থানায় এফআইআর হয়েছিল। বাড়ির ভিতরে ঢুকে খাটের তলা থেকে একটার পর একটা প্লাস্টিক প্যাকেট উদ্ধার করেন ইডি কর্তারা। এই প্লাস্টিকের প্যাকেটেই রাখা ছিল যকের ধন। টাকা গুনতে আনা হয় ব্যাঙ্কের মেশিন। আসেন ব্যাঙ্ক কর্মীরাও।
সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হয়ে যায়। তবুও শেষ হয় না টাকা গোনার কাজ। অবশেষে রাত ১১টার কিছু পরে গার্ডেনরিচ ছাড়েন ইডির কর্তারা। সঙ্গে নিয়ে যান ১০টি ট্রাঙ্ক ভর্তি নোটের বান্ডিল। যেখানে ছিল ২০০০, ৫০০, ১০০ এবং ৫০ টাকা। একটা সময় ট্রাঙ্ক ভরে যায়, কিন্তু নোটের বান্ডিল শেষ হয় না। টাকা উদ্ধারের পর আমিরের বাড়ির লোকজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে এই বিপুল পরিমাণ টাকা কোথা থেকে এল, তা খতিয়ে দেখবে ইডি। হদিস পাওয়া গিয়েছে বিপুল সম্পত্তিরও।