রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি টাকার হদিশ পেয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। তাঁদের সংস্থা ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের আয় নিয়ে গরমিল আছে বলে দাবি ইডির। ইডি সূত্রে খবর, কসবার ইচ্ছে সংস্থার অফিসে কোভিডের সময় অনুষ্ঠান ভাড়া ও শুটিংয়ের ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় ৮১ লক্ষ দেখানো হয়েছে। আবার কোভিড কিছুটা কমার পর সেই বাড়ির বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ৪৩ লক্ষ টাকা। তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ইডির এক কর্তার প্রশ্ন, কোভিডের সময় কীভাবে অনুষ্ঠান বাড়ি বা শুটিং চলছিল! যে হিসেব দেখানো হয়েছে, তাতে ৮ কোটি টাকার কাছাকাছিও হিসেব পাওয়া যাচ্ছে না। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কত টাকা লেনদেন হয়েছে, তা এখনও তদন্ত করে দেখছে ইডি।
পার্থ ও অর্পিতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ৮ কোটি টাকার উৎস কী! ইডি প্রাথমিক জেরায় জানতে পেরেছে, অর্পিতা সিনেমার প্রযোজক হতে চাইতেন। আর সেই 'ইচ্ছে' সংস্থার নামেই করতে চেয়েছিলেন। বাংলা ও পরে ওড়িয়া সহ বিভিন্ন ভাষার ছবি প্রযোজনা করতে চেয়েছিলেন। তদন্তকারীদের দাবি, অর্পিতা জানিয়েছেন টাকার অভাবেই প্রযোজনার কাজ শুরু করতে পারেননি তিনি। তাঁর দুটি ফ্ল্যাট থেকে এখনও পর্যন্ত ৫১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। শহরে আরও ১২-১৫টি ফ্ল্যাট আছে তাঁর নামে। তাই অর্পিতার বয়ান যাচাই করছে ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, পার্থ ও অর্পিতার বেশ কিছু LIC পলিসিরও খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এদিকে ২০২০-২১ আর্থিক বছরের লাভ ক্ষতির খতিয়ানও বেশ অবাক করার মতো। সংস্থার স্থায়ী আমানত ১২ লক্ষ ২৮ হাজার ৪৪৭ টাকা দেখানো হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, আয়-ব্যয়ের তথ্যের বিপুল গরমিল আছে।
আরও পড়ুন: ইডির নজরদারিতে পার্থ-অর্পিতার জন্য রান্না, পছন্দের খাবার না পেয়ে গোঁসা পার্থর
২০১২ সালের ২০ জানুয়ারি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একটি যৌথ সম্পত্তির দলিল ইডি আধিকারিকদের সামনে এসেছে। সেই ছবি দেখে ধন্দে ইডি কর্তারা। বিশেষত দলিল বা সরকারি কাজে সাধারণত সাম্প্রতিক ছবি লাগে। কিন্তু এই দলিলে কলেজ আমলের ছবি আছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ইডির একাংশের মতে, পরিচয় লুকোতেই কি পুরনো ছবি ব্যবহার করা হয়েছে! সই দেখেও কিছুটা সংশয়ে পড়েছেন ইডি কর্তারা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সইও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।