কোভিডের সময় থেকেই বিনামূল্যে রেশন দেওয়া শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। তারপর খাদ্য সুরক্ষা আইনে প্রায় ৮০ কোটির বেশি মানুষকে ভর্তুকি দিয়ে সামান্য দামে চাল গম বিক্রি করা হত। সেক্ষেত্রে ৩ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হয় এবং ২ টাকা কেজি দরে গম বিক্রি করা হয়। তবে এবার থেকে বড়সড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য দেওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কারণ ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য কে দিচ্ছে সেটা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন সময় টানাপোড়েন চলতেই থাকে। সেই কারণে নয়া পদ্ধতি চালু হতে চলেছে এবার।
এবার থেকে উপভোক্তাদের যে খাদ্যশস্য দেওয়া হবে সেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের খরচের ভাগ কতটা তা উল্লেখ থাকবে স্লিপে। রাজ্য সরকারের তরফেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, কোভিড পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিটি রাজ্য সরকারের কাছে একটি নির্দেশিকা আসে। সেখানে জানানো হয়, খাদ্যশস্য দিতে কেন্দ্র ও রাজ্যের খরচের হিসেব জানাতে হবে রেশন উপভোক্তাদের। অনেক রাজ্য এই ব্যবস্থা চালু করলেও পশ্চিমবঙ্গে চালু ছিল না বলেই জানিয়েছেন অনেকে। এবার সেই ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে রাজ্যে। রেশন দোকানের E-POS যন্ত্র থেকে কাগজের এই স্লিপ বের হয়। ১ নভেম্বর থেকে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
এর পাশাপাশি এবার থেকে চাল ও গম বণ্টন নিয়মেও বদল আনা হয়েছে। এবার থেকে আগের তুলনায় কম চাল দেবে সরকার। তবে তুলনামূলক বেশি গম পাবেন।
চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত অন্ত্যোদয় কার্ডে ৩ কেজি চাল ও ২ কেজি গম দেওয়া হত। কিন্তু এখন এই নিয়মে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এবার থেকে আড়াই কেজি করে কম পাওয়া যাবে এবং ৩ কেজির পরিবর্তে ২.৫ কেজি চাল দেওয়া হবে।
আগে মাসে ১৪ কেজি গম ও ৩০ কেজি চাল পেতেন উপভোক্তারা। কিন্তু ১ নভেম্বর থেকে চালের পরিমাণ অনেকটাই কমানো হয়েছে। তবে গমের পরিমাণ ১৪ কেজি থেকে বাড়িয়ে ১৭ কেজি করা হয়েছে।
EKYC-র দিন পরিবর্তন
রেশন নেওয়ার জন্য E-KYC বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন নির্ধারিত করা হলেও পরে EKYC-র সময় বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
রেশন কার্ডের মাধ্যমে কারা কারা খাদ্যশস্য পাবেন সেনিয়েও বিশেষ নিয়ম জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার-
প্রথমত-কারোও বাড়িতে চারচাকা গাড়ি, ট্রাকটর থাকলে সেই ব্যক্তি রেশন কার্ড রাখতে পারবেন না। এছাড়াও রেফ্রিজারেটর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বাড়িতে থাকলেও রেশন কার্ড রাখা যাবে না।
দ্বিতীয়ত- গ্রামীণ এলাকায় কোনও ব্যক্তির বাৎসরিক আয় ২ লাখ টাকা এবং শহরাঞ্চলে বাৎসরিক আয় ৩ লাখ টাকা পেরিয়ে গেলে সেই ব্যক্তির নামে কোনও রেশন কার্ড রাখা যাবে না।
তৃতীয়ত-কোনও পরিবারের একজন ব্যক্তি সরকারি চাকরি করলে সেই পরিবারের কেউ রেশনের সুবিধা নিতে পারবেন না।
চতুর্থত- কোনও পরিবারে লাক্সারি আইটেম থাকলে এবং পরিবারের কোনও সদস্য আয়কর দিলে সেই পরিবারের কেউ রেশন কার্ডের সুবিধা মিলবে না।