উৎসবের মরশুম চলে গিয়েছে। এবার অক্টোবরেই ছিল দুর্গাপুজো, কালীপুজো, ভাইফোঁটা। এক মাসেই সব অনুষ্ঠানই কেটেছে। একই সঙ্গে মধ্যবিত্তের হেঁশেলেও চাপ বেড়েছে। এক বছর আগের অক্টোবর, আর এবার অক্টোবরে বাজারের খরচ লাফিয়ে বেড়েছে কয়েকগুণ। মূল্যায়ণ সংস্থা ক্রিসিলের সমীক্ষা রিপোর্ট দেশবাসীর হেঁশেলের খরচ নিয়ে একটি সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, গত এক বছরে আমিষ, নিরামিষ- দুই ধরনের খাবার তৈরির খরচই বেড়েছে। আপনি আমিষ খান, অথবা নিরামিষ-তাতে খাদ্য খরচ থেকে কিন্তু রেহাই নেই। শুধু এই বাংলা নয়, একই সংকটে পড়েছে দেশের সব রাজ্যই।
ক্রিসিলের সমীক্ষা রিপোর্ট জানিয়েছে, গত বছর অক্টোবরের থেকে এই বছর অক্টোবরে নিরামিষ থালির দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে নিরামিষ থালির দাম বেড়েছে ৩৩ টাকা ৩০ পয়সা। সেপ্টেম্বরে এই ব্যবধান ছিল ৩১ টাকা ৩০ পয়সা। গত এক বছরে টোমাটো, আলু, পেঁয়াজ, রসুনের দাম বৃদ্ধিও কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে আমজনতার। অন্য দিকে যারা আমিষ খান, তাঁরাও যে খুব নিশ্চিন্ত, তা নন। গত এক বছরে মুরগির মাংসের দাম ৯ শতাংশ কমেছে। সবজির আগুন দাম। তাই আনাজ খাওয়ার থেকে, সস্তায় মাংসভাত খাওয়া ভাল। এমন ধারণা এখনও যাদের আছে, তাদেরও ভাবার সময় এসেছে। গত এক বছে আমিষ থালির খরচ বেড়েছে ৬১ টাকা ৬০ পয়সা। ২০২৩ সালে অক্টোবরে আমিষ থালি রান্নার খরচ ছিল ৫৮.৬০ পয়সা। এই বছর যারা হয়েছে, ৬১ টাকা ৬০ পয়সা।
ভাত-রুটির হার নিয়েও আলাদা করে সমীক্ষা করেছে ক্রিসিল। এই সমীক্ষা খাদ্যপণ্যের উপর দামের প্রভাবকে আলাদা করে দেখিয়েছে। রিপোর্টে দাবি কা হয়, গত মাসে টানা বৃষ্টিতে বাজারে আলু-পেঁয়াজের জোগান অনেকটাই কম ছিল। তা পূরণ করতেই দাম বেড়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় আনাজের। দেশের অন্যতম শস্যক্ষেত, পঞ্জাব, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকে অতিবৃষ্টির প্রভাব পড়ে। তার ফলে সব ধরনের সবজিরই দাম বেড়েছে। টমাটোর দাম দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। নিরামিষ থালিতে প্রধান আইটেম ডাল। সেই ডাল কিনতেই ১১ শতাংশ বেশি অর্থ লেগেছে। তাই প্লেটের দাম একধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছে। আমিষ থালির প্রধান পদ মাংস। মাংসের দাম কমলেও অন্য খাদ্যপন্যের দাম বৃদ্ধি হয়েছে। তাই মাংসের দাম কমলেও তা স্বস্তি পাননি দেশবাসী। তবে সমীক্ষা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ৯ শতাংশ জ্বালানির খরচ কমেছে। তাই কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে প্লেটের দাম। না হলে এই দাম আরও বাড়ত বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।