প্রায় ১৫ ঘণ্টা পরিষেবা সাময়িক বন্ধ থাকার পর ফের খুলে দেওয়া হল কলকাতা ও ভুবনেশ্বর বিমানবন্দর। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে পরিষেবা চালু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মাঝরাত থেকেই ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকায় ল্যান্ডফল করে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। তবে পশ্চিমবঙ্গে সেভাবে প্রভাব পড়েনি।
ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট বা IMD-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাতে ওড়িশার কেন্দাপাড়া জেলার ভিতরকণিকা এবং ভদ্রক জেলার ধামরা-তে ল্যান্ডফল করে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ । তবে এর আগে IMD-র তরফে জানানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের দিঘা, সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন অঞ্চলে প্রভাব ফেলতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। আর সেই কারণে বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কলকাতা বিমানবন্দর পুরোপুরিভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে ৫টায শেষ বিমাটি উড়ে যায়। কিন্তু যেহেতু সেভাবে কোনও বড়সড় প্রভাব পড়েনি কলকাতায় । সেই কারণে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই পরিষেবা চালু করা হয়।
শুধু বিমান পরিষেবা নয়, একাধিক রুটের ট্রেন পরিষেবাও স্বাভাবিক রযেছে। শুক্রবার সকাল থেকে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী হাওড়া-বর্ধমান রুটের ট্রেন চলাচল করছে। এছাড়াও বর্ধমান ও হাওড়ার মধ্যে বাস পরিষেবাও স্বাভাবিক রয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল প্রায় সাড়ে ১০ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ল্যন্ডফল প্রক্রিয়া চলবে। এবং ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এদিন দুপুর থেকে ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়াবিদদের অনেকের বক্তব্য, শুক্রবার বিকালের পর থেকে তার গতিপথ স্পষ্ট হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ঠিক কত তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রবল বৃষ্টির জেরে বাংলা ও ওড়িশা, দুই রাজ্যেই ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ভাঙতে পারে প্রচুর মাটির বাড়িও। যদিও, ঘূর্ণিঝড় আসার আগেই বাংলা ও ওড়িশার উপকূল অঞ্চল থেকে ৫ লক্ষের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছিল।
‘দানা’ মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। প্রাণহানি আচকাতে আগেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল উপকূলবর্তী এলাকার কয়েক লাখ মানুষকে। মূলত দিঘা, তাজপুর, জুনপুট, সাগরদ্বীপ, বকখালি সহ বিভিন্ন এলাকার গ্রামগুলি পুরোপুরি খালি করে দেওয়া হয়েছিল। অস্থায়ী ত্রাণশিবির এবং সাইক্লোন সেন্টারে রাখা হয়েছিল তাঁদের। বৃহস্পতিবার সারারাত নবান্নে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তাঁরা বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে ‘দানা’-র গতিপথের দিকে নজর রাখেন।
বড়সড় প্রভাব না পড়লেও দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় বৃহস্পতিবার সারারাত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। এমনকি শুক্রবার সকাল থেকেও, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, দুই পরগনার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বিকাল পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।