প্রয়াগরাজে মহাসমাগম। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এই মেলা চলবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। 'মানবসভ্যতার ইতিহাসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসমাগম' হিসেবে উল্লেখ করা হয় এই মেলাকে। এই মিলন মেলায় পুণ্য অর্জন করতে কোটি কোটি মানুষের সমাগম হয়। সাধু-সন্ন্যাসীদের ভিড়ে ভরে ওঠে মেলা প্রাঙ্গন। এই মহাসমারোহে দেশ বিদেশ থেকে ভক্ত সমাগম হয়েছে। পুণ্যস্নান করতে আসা এই কোটি কোটি মানুষের মধ্যেও নজর কেড়েছেন এক যুবতী।
প্রশ্ন জাগছে তো? কুম্ভ মেলার সঙ্গে এই লাস্যময়ীর যোগ কোথায়? এবার এই ভিডিওটি দেখুন।
কুম্ভ মেলার এই নয়া সেনসেশনের নাম হর্ষা রিচারিয়া। ভিড়ে ঠাসা মেলা প্রাঙ্গনে তাঁকে নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। কেন? এর কারণ অবশ্যই তাঁর গ্ল্যামার। সুন্দরী এই যুবতী পুণ্য অর্জন করতে যোগ দিয়েছেন কুম্ভ মেলায়। গলায় গাঁদা ফুলের মালা, কপালে হলুদের টিকা সাধ্বী বেশে এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তাঁর ভিডিয়ো। তাঁর সৌন্দর্যে মোহিত আট থেকে আশি। শুধু তাই নয় একাধিক সমালোচনার মুখেও পড়ছেন এই যুবতী। কেন? কে ইনি?
সাধ্বী হর্ষা, একসময় সঞ্চালিকা হিসেবে কাজ করতেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার্স সংখ্যা প্রায় ৭৫৯ হাজার। তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবেও কাজ করেছেন।
তিনি উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। যদিও এই মুহূর্তে, ইনস্টাগ্রাম বায়োতে তাঁর পরিচয় “ “সনাতনী শেরনি” নামে, তিনি নিরঞ্জনী আখড়ার আচার্য মহামণ্ডলেশ্বর স্বামী শ্রী কৈলাশনান্দগিরি জি মহারাজের শিষ্যা।
কুম্ভমেলায় সমস্ত স্পট লাইট কেড়ে নিয়েছেন এই বছর ৩০ এর যুবতী। তিনি জানিয়েছেন ‘শান্তি’ খুঁজে পেতেই এই বেশ ধারণ করেছেন। কিন্তু তাঁর ভিডিও ঘিরে উঠেছে সমালোচনার ঝড়. কেউ বলছেন কেবলই ফলোয়ার্স বাড়াতে কুম্ভ মেলায় এসেছেন তিনি, সনাতনী বেশ ধারণ করেছেন। তাঁর সনাতনী বেশের ছবি শেয়ার করে এক ব্যবহারকারী ক্যাপশনে লিখেছেন, “যারা ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য অস্থায়ীভাবে গেরুয়া ধারণ করে, তাদের এড়িয়ে চলা উচিত।” পোস্টটি দ্রুত সবার নজর কাড়ে এবং ৪ লক্ষ ২৫ হাজারেরও বেশি ভিউ পায়।
অথচ একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, দু বছর ধরেই এই সাধনায় যুক্ত তিনি। গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড, ঝাঁচকচকে জীবন তিনি পিছনে ফেলে এসে আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকেছেন। তাঁর সমর্থনেও মুখ খুলেছেন প্রচুর মানুষ। একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “তাঁর স্বাধীনতা আছে। কেন সমালোচনা করা হবে? তাকে নিজের জীবন বাঁচতে দিন। তিনি হয়তো দুই জগতের সেরা দিকগুলো অন্বেষণ করছেন।” যদিও এই সমস্ত সমালোচনা গায়ে মাখতে নারাজ হর্ষা। তীব্র বিতর্কের পরেও তাঁর আধ্যাত্মিকতার পোস্ট লাগাতার চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। ভাইরাল হওয়ার আদর্শ উদাহরণ এই যুবতী ।
মহাকুম্ভ শুরুর দিন অর্থাৎ ১৩ জানুয়ারি, হর্ষা রিচারিয়ার ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার ছিল প্রায় ৬ লক্ষ ৬৭ হাজার। কিন্তু মাত্র একদিনের মধ্যে, ১৪ জানুয়ারি, তাঁর ফলোয়ার্স সংখ্যা পৌঁছয় ১০ লক্ষে। অর্থাৎ মাত্র একদিনেই ইনস্টাগ্রামে হর্ষা রিচারিয়ার ফলোয়ার বেড়েছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার।
শুধু তিনিই কেন কুম্ভ মেলায় দেখা মিলেছে এক আইআইটি বাবাজিরও। নজর ছিল ‘অ্যাপল’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্টিভ জবসের (Steve Jobs) স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবসের উপরেও। স্বামী কৈলাশনান্দগিরি শিবিরেরই একজন শিষ্যা তিনি। রবিবার কাশি বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে পুণ্যযাত্রা শুরু করেন এই বিদেশিনী। শনিবার আধ্যাত্মিক গুরু কৈলাসানন্দ মহারাজ জানিয়েছেন যে লরেন পাওয়েল দ্বিতীয়বার ভারতে এসেছেন এবং এইবার এসে নতুন নাম ধারণ করবেন তিনি। নাম হবে কমলা। আধ্যাত্মিকতার টানেই ভারতে এসেছিলেন তিনি। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নিরঞ্জনী আখড়ার শিবিরে থাকেন লরেন। কিন্তু ভিড়ে ঠাসা কুম্ভে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন লরেন। তাঁর অ্যালার্জির সমস্যা বাড়ে ব্যাপকহারে। এরপরেও সঙ্গমে ডুব দেওয়ার আচারে অংশ নেবেন তিনি জানা গিয়েছে এমনটাই। এই মহাযজ্ঞের আরও নানা খবরে চোখ থাকবে আমাদের। তাই আপনাদেরও চোখ রাখতে হবে এডিটরজি বাংলায়।